বাবুল হক, মালদহ: শীতের রাতে রাস্তার ধারে ম্যারাপ বেঁধে চলছিল ধর্মীয় জলসা। উপস্থিত ভক্তরা মশগুল তাতে। হঠাৎ গুলির আওয়াজে ছন্দপতন। চমকে উঠলেন দর্শকরা। দেখা গেল গেটের কাছে দাঁড়িয়ে মদের বোতল হাতে এক যুবক শূন্যে গুলি চালিয়ে হাসছে। ওই যুবকের জলসা ভণ্ড করার মতলব বুঝে ক্ষিপ্ত দর্শক ধেয়ে গেল তার দিকে। চলল এলোপাথাড়ি কিল-চড়-ঘুসি। একজন কেড়ে নিলেন ওই যুবকের হাতে থাকা বন্দুকটি। এরই মাঝে ওই মদ্যপ যুবককে বাঁচাতে এল তার দাদা। জনতার রোষ গিয়ে পড়ল তার উপরও। তাকেও বেধড়ক মারধর করল জনতা। ততক্ষণে নাক, মুখ ফেটে গলগল করে রক্ত ধরছে দুই যুবকেরই। কিন্তু তাতেও রাগ কমেনি ক্ষুব্ধ জনতার। এদিন আশপাশে বাড়িঘরেও ভাঙচুর চালায় ক্ষুব্ধ জনতা। আগুন ধরিয়ে দিল রাস্তার ধারে থাকা খাবারের দোকানগুলিতেও। এমনকী পিটিয়ে ওই দুই যুবককে মারার পরও তাদের গায়েও আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। খবর যায় থানায়। অবশেষে পুলিশ এসে উদ্ধার করল দু’টি রক্তাক্ত নিথর দেহ।
ঘটনাস্থল মালদহের কালিয়াচক থানার সুজাপুর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের হাসপাতালের মোড়। শুক্রবার রাতে জনরোষে সেখানেই মৃত্যু হয় দুই দুষ্কৃতীর বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃতদের নাম ছোটা সাদিকুল (৩৫) ও তার দাদা সরিফুল (৩৮)। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের। নিহত দু’জনের বিরুদ্ধেই চুরি, ছিনতাই, অস্ত্র পাচারের অভিযোগ বলে পুলিশ জানিয়েছে। শুক্রবার রাতের ঘটনার রেশ চলে শনিবার সকাল পর্যন্ত। এদিন ছোটা সাদিকুল ও সরিফুলকে মারার প্রতিবাদ করতে ঘটনাস্থলে আসে খাদিম শেখ ও তার দলবল। স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধরও করে তারা। তখন ক্ষুব্ধ জনতা চড়াও হয় তাদের উপর। ব্যাপক মারধর করা হয় খাদিম ও তার সঙ্গীদের। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কোনওরকমে ক্ষুব্ধ জনতার চোখে ধুলো দিয়ে পালায় খাদিম। তবে তার সঙ্গীরা গুরুতর জখম বলে জানা গিয়েছে। এরপর ক্ষুব্ধ জনতা এলাকার গাঁজা, মদের ঠেকে ভাঙচুর চালায়। বেশ কয়েকটি চোলাই মদের ঠেক ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
ফাইল চিত্র
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.