সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: লকডাউনের বাজারে শূন্য ভাঁড়ার। বাধ্য হয়ে তাই পেট ভরাতে হচ্ছে শাকপাতা দিয়েই! অভিযোগ, সরকারি সাহায্য পঞ্চায়েত অফিসে এলেও তা পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা। প্রতিবাদে বুধবার রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে, গাছ ফেলে বিক্ষোভ দেখালেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মথুরাপুর ১ নম্বর ব্লকের পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা। দীর্ঘক্ষণ পর নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি।
করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে জারি লকডাউন। যার জেরে কাজ হারিয়েছেন মথুরাপুরের রাধাকান্তপুর, পানাপুকুর, কালিতলা, শম্ভুচন্দ্রপুর ও সুদিরঘাট গ্রামের বাসিন্দারা। ফলে চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন তাঁরা। অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে মিলছে না আর্থিক সাহায্যও। তাই বুধবার সরকার অনুমোদিত চাল, ডাল, আলুর দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। কালীতলার মস্তানমোড়ে ঘোড়াদল যাওয়ার রাস্তায় গাছ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে দীর্ঘক্ষণ চলে বিক্ষোভ।
গ্রামবাসী ফিরোজা বিবির অভিযোগ, গাড়ি গাড়ি চাল, ডাল পঞ্চায়েত অফিসে আসছে। কিন্তু তাঁদের কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে পুকুরপাড় থেকে শাকপাতা তুলে তা সেদ্ধ করে কোনওরকমে একবেলা খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। ঝড়ে ঘরের চাল উড়ে গিয়েছে। ত্রিপল চাইলে তাও দিচ্ছে না পঞ্চায়েত। এক বিক্ষোভকারী জানে আলম জমাদার বলেন, লকডাউনের বাজারে কোনও কাজ নেই। খেতে পাচ্ছেন না তাঁরা। পঞ্চায়েত অফিসে গেলে পাত্তাই দেওয়া হয় না তাঁদের। যাদের প্রয়োজন নেই তাঁরাই কেবল পাচ্ছে সরকারি সাহায্য। প্রশাসনের কাছে তাঁদের দাবি, দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সুকৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে বহুবার ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্যদ্রব্য মজুত থাকলেও কেন গ্রামের মানুষ তা পাচ্ছেন না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডায়মন্ড হারবার মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছে এই আন্দোলনের পিছনে কলকাঠি নাড়ছে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি। তাঁদের কথায়, সরকারি সাহায্য বিলিবন্টনে কোনও দুর্নীতি হচ্ছে না। বিপদগ্রস্ত প্রত্যেক মানুষকেই সরকারি নিয়ম মেনে সমানভাবে বন্টন করা হচ্ছে খাদ্যদ্রব্য। তা সত্ত্বেও মাঝেমধ্যেই গ্রামের সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনে নামিয়ে রাজ্য সরকারকে হেয় করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.