নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সন্ধে বা রাতে এলাকায় চোর ঢুকলে চোরকে ‘পেটানো’র নিদান দিয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আর তারপরেই সাঁইথিয়া ব্লকের ওমরপুর পঞ্চায়েতের হাজরা পাড়ায় বহিরাগতদের রাতে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করে পোস্টার দিলেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, যে রাজনৈতিক দলের লোক হোক, দিনে এলে স্বাগত৷একইভাবে বুধবার রাতে সাঁইথিয়া হাসপাতালে আত্মীয়কে দেখতে এলে বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডলকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে৷ ফলে নির্বাচনের মুখে চোর সন্দেহে আগামী কয়েকদিন রাতের বীরভূমে উত্তেজনা বাড়বে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা৷
রাতে এলাকায় বহিরাগতরা আসছে। এই অভিযোগ সব রাজনৈতিক দলের। সেই বহিরাগতদের রাতে দেখলেই ‘চোর’ চিহ্নিত করে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে নিদান দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ সাঁইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিজের অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে যান দুধকুমার মণ্ডল৷ তাঁর অভিযোগ, বেশ কিছু যুবক বাইক নিয়ে আমার গাড়ি আটকায়। তাঁদের দাবি, বহিরাগতকে এলাকায় ঢুকতে দেব না। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সাঁইথিয়া ব্লকের ওমরপুর পঞ্চায়েতের হাজরা পাড়ায় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে গাছে হাতে লেখা পোস্টার টাঙিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর পিছনে দু’দিন আগে গভীর রাতের একটা ঝামেলার কথা বলছে গ্রামবাসীরা। তাদের অভিযোগ, সেদিন গভীর রাতে এলাকার তৃণমূল বুথ পর্যবেক্ষক সদাশিব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাইক বাহিনী গ্রামে ঢোকে। বিরোধী দলের পতাকা খুলে ফেলে দিচ্ছিলেন। সেই রাতেই তাঁর কাজে বাধা দেয় গ্রামবাসীরা। তাকে কেন্দ্র করে বিবাদ চরমে ওঠে। তারপরেই গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নেয়,সন্ধের পরে গ্রামে প্রচার নয়। গ্রামবাসী জগন্নাথ হাজরা, সবিতা হাজরারা বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে গ্রামে কোনও রাজনৈতিক দলকে ঢুকতে দেব না। দিনে তারা প্রচার করুক। রাতে এলেই শান্তি নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে।’
ওইদিন রাতে বিজেপির পতাকা খোলা হচ্ছিল বলে দাবি করেন এলাকায় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিপদতারণ দাস। তিনি বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে রাতে চোরের মতন ঢুকছে তৃণমূলই। গ্রামবাসীদের এই পোস্টার তার প্রমাণ।যদিও সেদিন রাতে তিনি আদৌ এলাকায় যাননি বলে দাবি করেছেন সিপিএম থেকে তৃণমূলে যাওয়া সদাশিববাবু। তাঁর দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।সাঁইথিয়া ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতি প্রশান্ত সাধুর কথায়, বিজেপি এমন অপপ্রচার করে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে এলাকায় বহিরাগতদের ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সবমিলিয়ে, ভোটের মুখে বীরভূমের বেশ কয়েকটি এলাকা বেশ থমথমে৷ চোর এড়াতে অন্য অশান্তির আশঙ্কাও করা হচ্ছে৷
ছবি: শান্তনু দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.