অরূপ বসাক, মালবাজার: পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরলেই বাড়বে করোনা সংক্রমণ। মূলত এই আতঙ্কেই ভিনরাজ্য ফেরত শ্রমিকদের জন্য নিজেরা অর্থ খরচ করে নদীর ধারে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করলেন মালবাজারের সাইলিজোটের বাসিন্দারা। রাতে হাতির হাত থেকে সেটিকে বাঁচাতে গ্রামের যুবকেরাই দিচ্ছেন পাহারা।
করোনা আতঙ্কে জেরবার গোটা দেশ। প্রতিদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতেই বাড়ি ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এতেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলোতে চাপ বাড়ছে। এভাবে চললে কিছুদিন পরে এত মানুষকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে জায়গা দেওয়া মুশকিল হয়ে যাবে প্রশাসনের পক্ষে। কিন্তু ভিনরাজ্য ফেরতদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতেও দেওয়া যাবে না, কারণ সংক্রমণের ভয়। এই সব কথা মাথায় রেখেই মালবাজার মহকুমার সাইলিজোট এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি হল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার৷ তবে এতে সহযোগিতা করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর এবং পুলিশ প্রশাসন।
এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের উদ্যোক্তা সোনম লামা বলেন, “প্রতিদিন গ্রামে আসছে ভিনরাজ্যে কাজ করা ছেলে-মেয়েরা। বাইরে থেকে এলেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতেই হবে। কিন্তু বর্তমানে যে সব কোয়ারেন্টাইন সেন্টার আছে, তা প্রায় ভরতি। তাছাড়া গ্রামের থেকে বহু দূরে অবস্থিত সেই সব কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। পাশাপাশি খাওয়ার মানও ঠিকঠাক নয়। সমস্যা শৌচাগারেরও। তাই আমরা গ্রামের মানুষেরা নিজেরাই টাকা দিয়ে চেল নদীর ধারে তৈরি করেছি এই সেন্টার। বর্তমানে মহিলাদের ৪ টি এবং পুরুষদের ৬ টি বেড আছে। আরও তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে দুজন ভিন্নরাজ্যের মানুষ রয়েছে এই সেন্টারে। প্রতিনিয়ত
স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে তাঁদের পরীক্ষা করছেন। ঘুরে দেখছে পুলিশ-প্রশাসনও।
এলাকার বাসিন্দা পবন লামা, বাবু সরকার বলেন, এক্ষেত্রেও একাধিক সমস্যা আছে। রাত হলেই হাতির দল হানা দেয় এই সব এলাকায়। তাই কিছুটা হলেও ভয় রয়েছে। তবে গ্রামের যুবকেরা রাত হলেই মশাল নিয়ে পাহাড়া দেই এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। স্থানীয়দের মানুষের দাবি, রাতের দিকে যদি বনকর্মীরা এলাকায় থাকে তাহলে হাতির হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে মালবাজার ব্লকের বিএমও এইচ প্রিয়াঙ্কু জানা বলেন, “গ্রামের মানুষেরাই তৈরি করেছে। ওই এলাকার বাইরের লোক ফিরলে গ্রামের মানুষেরা সমস্ত নিয়ম মেনেই তাদের রাখছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে চেকআপ করছে। টেষ্ট করতে ব্লক হাসপাতালেও আসছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.