দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: প্রসুতি এবং শিশুদের জন্য তৈরি খিচুড়ি। তার মধ্যেই ভাসছে আস্ত টিকটিকি। এমন দৃশ্য দেখে হতবাক গ্রামবাসীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের ঘটনায় ফের প্রকট রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের আধিকারিকদের উদাসীনতার ছবি। মঙ্গলবার ভাঙড়ে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছিল। পোলেরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়তের অন্তর্গত টোনা উড়িয়াপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সে সময় তিল ধারনের জায়গা নেই। বিনামূল্যে খিচুড়ি খেতে ভিড় উপচে পড়েছে। আচমকাই এক মহিলা লক্ষ্য করেন খিচুড়িতে আলু আর সোয়াবিনের সঙ্গেই কিছু একটা ভাসছে। ভাল করে হাত দিয়ে নেড়ে তিনি দেখেন আস্ত একটা টিকটিকি। কোনও ভাবে রান্নার সময় সেটি কড়াইতে পড়ে যায়। টিকটিকি-শুদ্ধ খিচুড়ি রান্না করে দেয় রাঁধুনি।
খবর ছড়িয়ে পরতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। রাঁধুনি অঞ্জনা মণ্ডলকে ঘেরাও করে রাখেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভাঙড় ২ ব্লকের টোনা উড়িয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রতিদিনই চলে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। নিজস্ব কোনও কিচেন শেড না থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যেই রান্না করা হয়। প্রতিদিনের মতো এদিনও সেখানে শয়ে শয়ে মানুষ এসেছিলেন খেতে। ছিলেন অনেক সন্তান সম্ভবা মা-ও। জাহানারা বিবি নামে এক মহিলা বিষয়টি প্রথম দেখেন। তাঁর আড়াই বছরের ছেলের জন্যে খিচুড়ি নিতে এসেই দেখেন এই কাণ্ড! খবর পেয়েই ছুটে আসেন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী সাহিদা খাতুন। তাঁর কথায়, এর আগে কোনওদিন এমন ঘটনা ঘটেনি। আজ কোনওভাবে ভুলবশত হয়ে গিয়েছে। সকলেই তাকে প্রশ্ন করেন, দায়িত্বে থাকা কেন্দ্র ছেড়ে নিজের বাড়িতে কি করছিলেন তিনি? এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি সাহিদা।
এদিকে ঘটনাস্থলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন কাশীপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। পরে ঘটনাস্থলে আসেন ভাঙড় ২ ব্লকের সিডিপিও অর্পিতা রায় সান্যাল ও যুগ্ম বিডিও পুষ্পেন দাস। এদিকে ঘটনা জানাজানি হওয়ার আগেই টিকটিকি মেশানো ওই খিচুড়ি খেয়েছিল ত্রিশটি শিশু। পরে তারা অসুস্থ বোধ করলে তাদের চিকিৎসার জন্য প্রাথমকি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক আসেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, যেসমস্ত শিশুরা অসুস্থ বোধ করছিল তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওআরএস খেতে বলা হয়েছে। আপাতত সকলেই সুস্থ আছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.