অঙ্কন: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
সন্দীপ চক্রবর্তী: পথ দেখিয়েছে কিছু গ্রাম। শহরের বিভিন্ন অংশে যেখানে লকডাউনে মানাতে বাধ্য করতে হচ্ছে পুলিশকে, সেখানে গ্রামগুলোয় উলটোপথে হাঁটার ছবি। আর এই লকডাউনে গ্রামবাংলার মানুষই নজির রাখলেন সচেতনতার।
পঞ্চায়েত বা মফস্বলের কিছু পুরসভায় নির্দিষ্ট কাগজ হাতে নিয়ে নির্দিষ্ট দিনেই বের হতে পারছেন নাগরিকরা। আরও অন্যরকম পথে হেঁটে তাক লাগিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার বড়য়া এবং লাগোয়া গ্রামে। বুদ্ধপূর্ণিমায় দিন প্রতি বছরই ধর্মরাজের পুজো হয়। আত্মীয়দের বাড়িতে অন্য বহু দূরের গ্রাম থেকে মানুষ পুজোয় মেলাও বসে। তবে এবার বসেনি। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখে পুজো হয়েছে। এবার সজাগ থেকে নিয়ম করে দিয়েছিলেন গ্রামের মাতব্বর, বারোয়ারি পুজো কমিটির কর্তারা। পুজোর আগে থেকেই মাইকে ঘোষণা করা হয়েছে যে কেউ নিজের বাড়ি ছাড়া অন্য কারও বাড়ি গেলে বা বাইরের কাউকে গ্রামের কারও বাড়িতে দেখা গেলে ৫০০ টাকা জরিমানা নেওয়া হবে। তা আদায় করা হবে পুজো খাতে। যার বাড়িতে অন্য এলাকার বাসিন্দাদের দেখা যাবে, সেই বাড়ির সদস্যদেরও থাকতে হবে কোয়ারেন্টাইনে। – এই ঘোষণাতেই কেল্লা ফতে।
গ্রামের বাসিন্দা বাসুদেব ভট্টাচার্য জানালেন, তেমনভাবে কাউকে নিয়মভঙ্গ করতে দেখা যায়নি। দুজন ভেঙেছিলেন বটে, তবে সঙ্গে সঙ্গে ভুল স্বীকার করে নেওয়ায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামে আদিবাসীদের বাসও রয়েছে। তাঁরাও কঠোরভাবে নিয়ম পালন করেছেন। এঁদের এক আত্মীয় কল্পনা মুর্মু পুজো উপলক্ষে গ্রামে আসছিলেন। ব্যাপারটা বুঝে নিয়ে মাঝরাস্তা থেকেই ফিরে যান। ৭ মে থেকে এই বিধি লাগু হয়েছে গ্রামে। যদিও পরিযায়ী শ্রমিকদের কোনও জরিমানার ব্যাপার নেই। তাঁদের সরাসরি ঘরে তোলা হচ্ছে। এটুকু বাদ দিলে বাইরে থেক আসা যে কারও ক্ষেত্রেই গ্রামবাসীদের নিদান, কোয়ারেন্টাইন।
পরিযায়ী শ্রমিকরা এখন দেশের নানা প্রান্ত থেকে গ্রামে, নিজেদের বাড়িতে ফিরছেন। ফিরলেই তাঁদের ঘরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে আশা কর্মীদের ভূমিকাও বেশ প্রশংসনীয়। তাঁরাও পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার খবর পেলেই সেই বাড়িতে পৌঁছে দরজায় তারিখ-সহ বিস্তারিত তথ্য লিখে রাখছেন। এতেই লকডাউনের সুফল মিলছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.