ধীমান রায়, কাটোয়া: কাটমানি ফেরতের দাবিতে জনরোষ অব্যাহত পূর্ব বর্ধমানে। এবার মঙ্গলকোটে পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বাড়িতে ভাঙচুর চালালেন গ্রামবাসীরা। এমনকী, পুলিশকে ঘিরেও চলল বিক্ষোভ। এদিকে এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ করেছেন আক্রান্ত উপপ্রধান।
তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মঙ্গলকোটের চানক গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রীনা চক্রবর্তী। তাঁর স্বামী প্রদীপ চক্রবর্তী এলাকায় দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত। এমনকী, ছেলে প্রিয়মও দলের যুবনেতা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, একশো দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুপারভাইজারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের কাটমানি আদায় করেছেন খোদ উপপ্রধানের স্বামী। জানা গিয়েছে, রবিবার প্রথমে কাটমানি ফেরত চেয়ে চানক গ্রামের তিনটি বুথ এলাকার সরকারি প্রকল্পে সুপারভাইজারদের উপরই চাপ সৃষ্টি করেছিলেন গ্রামবাসীরা। সুপারভাইজাররা তাঁদের জানান, কাটমানির টাকা পঞ্চায়েতে উপপ্রধান রীনা চক্রবর্তীর স্বামীর কাছে জমা দিয়েছেন। এরপর রাতে চানক গ্রামে পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বাড়িতে চড়াও হন গ্রামবাসীরা। চলে ব্যাপক ভাঙচুর। এমনকী খবর সোমবার সকালে যখন পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে যায়, তখন পুলিশকর্মীদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।
এদিকে রাতবিরেতে বাড়িতে হামলার ঘটনার রীতিমতো আতঙ্কিত চানক গ্রামে উপপ্রধান রীনা চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। উপপ্রধানের বক্তব্য, তিনি কোনও কাটমানি নেননি। বিজেপির উসকানিতেই তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন কয়েকজন গ্রামবাসী। বাড়ির সামনে বোমাবাজিও করা হয়েছে। আর বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সমীর দাসের দাবি, এই ঘটনার দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল নেতারা মানুষকে ভয় দেখিয়ে কাটমানি আদায় করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা দেওয়ার পর এখন মানুষ তাঁদের উপর পালটা চাপ দিচ্ছেন।
রবিবার কাটমানি ফেরতের দাবিতে পূর্ব বর্ধমানেরই আউশগ্রামে জনরোষের মুখে পড়েছিলেন এক তৃণমূল নেতা। রামনগর পঞ্চায়েতে পান্ডুক গ্রামে তাঁর বাড়িতে সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো গ্রামবাসী। চাপের মুখে একশো দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাটমানি নেওয়ার কথা স্বীকারও করে নেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল মণ্ডল। এমনকী, রীতিমতো মুচলেকা দিয়ে জানান, ২০ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.