সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুরভোটের মুখে ইস্তফা দিলেন পুরুলিয়ার ঝালদার তৃণমূল উপপুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠক। শনিবার বারবেলায় ঝালদা পুরসভায় পুরপ্রধানকে সম্বোধন করে এই ইস্তফাপত্র পুর কার্যালয়ে জমা করেন তিনি। উপপুরপ্রধান মুখে কিছু না বললেও তাঁর এই ইস্তফাপত্রের খবর ঝালদা পুর শহরে মুহূর্তে চাউর হয়ে যায়। তিনি বর্তমানে এই পুর শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাঁর এই ইস্তফা পত্রে ঝালদা রাজনৈতিক মহলে চাউর হয়েছে শাসকদলে তিনি এবার টিকিট পাবেন না এটা নিশ্চিত জেনেই পদত্যাগপত্র দিয়ে অন্য দলে পা বাড়াতে চাইছেন!
তাঁর এই ইস্তফাপত্রের সঙ্গে সঙ্গেই নানা জল্পনা চলতে থাকে ঝালদা পুর শহরে। তাহলে কি তিনি কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে সমগ্র ঝালদায়। কারণ, এই পুর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর তপন কান্দু কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন বলে ঝালদা রাজনৈতিক মহলের খবর। কারণ, এই বিজেপি কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ঝালদা থানার পুলিশের ওপর যে হামলার অভিযোগ রয়েছে সেই ঘটনায় তার আগাম জামিনের জন্য সবরকম বন্দোবস্ত করে দেয় স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বই বলে খবর। ফলে কংগ্রেসে যোগদানে ওই বিজেপি কাউন্সিলরের শরিক হতে পারেন তৃণমূলের উপপুরপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া কাঞ্চন পাঠকও বলে তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে।
শনিবার বিকেলে তাঁকে একাধিক বার ফোন ও মেসেজ করা হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি। ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার বলেন, “আমি দলের বৈঠকে জেলায় রয়েছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” ইস্তফাপত্রে উপপুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠক অবশ্য লেখেন, তাঁর শারীরিক অসুস্থতার জন্যই তিনি দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন। এই কাউন্সিলর ২০১৫ সালে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। তারপর তিনি শাসকদলে যোগ দিয়ে উপপুরপ্রধান হন। তিনি বর্তমান পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। এবার তিন নম্বর ওয়ার্ড মহিলার জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় তৃণমূলে তাঁর টিকিট পাওয়া একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে যায়।
কারণ, তিনি উপুরপ্রধান থাকাকালীন এলাকায় তাঁর জনসংযোগ সেভাবে না থাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়। আর এবার প্রার্থীর বিষয়টি টিম পিকের খানিকটা এক্তিয়ারভুক্ত হওয়ায় ঝালদা শহর তৃণমূলে পরিষ্কার হয়ে যায় তিনি শাসকদলে আর কোনওভাবেই টিকিট পাচ্ছেন না। তবে ঝালদা পুর শহরে পুরভোটের মুখে ও বোর্ড গঠনের আগে দলবদলের ঘটনা সাধারন মানুষের কাছে আর সেভাবে চাঞ্চল্য ছড়ায় না। এই প্রান্তিক পুরশহরের মানুষজন বুঝে গিয়েছেন ক্ষমতা পেতেই এখানকার জনপ্রতিনিধিদের ইস্তফা ও দলবদল চলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.