ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: স্রেফ অনুরোধ করাই নয়, দোকান মালিকদের নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। বিশ্বভারতীর জমি দখলমুক্ত করতে এবার অনশনে বসলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী স্বয়ং। অনশনে শামিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কর্মীরাও। সোমবার সকাল ৮ টা থেকে বিশ্বভারতীর গেটের বাইরে মঞ্চ বেঁধে অনশনে বসেছেন উপাচার্য। অনশন চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
শান্তিনিকেতনের হস্তশিল্প সামগ্রীর খ্যাতি জগৎজোড়া। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার মুখেই অন্তত একশো চল্লিশ দোকান রয়েছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকানও। শান্তিনিকেতনে যাঁরা বেড়াতে আসেন, তাঁরা হস্তশিল্প সামগ্রী কিনতে বিশ্বভারতীর সামনে দোকানগুলিতেই ভিড় করেন। রজতকান্তি রায় যখন উপাচার্য ছিলেন, তখন হস্তশিল্প সামগ্রী দোকানগুলির জন্য আলাদা একটি কমপ্লেক্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার যদি অনুমতি দেয়, তাহলে পূর্বপল্লিতে মাঠের শেষপ্রান্তে পূর্ত দপ্তরের ফাঁকা জমিতে পুর্নবাসন দেওয়া হবে হস্তশিল্প সামগ্রী ব্যবসায়ীদের। শুধু গেটের বাইরেই নয়, ওই কমপ্লেক্সে শান্তিনিকেতন চত্বরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সমস্ত হস্তশিল্প সামগ্রীর দোকানগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয় বলে খবর। বস্তুত এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে আলোচনাও চলছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখন বিশ্বভারতীতে ঢোকার মুখে দোকানগুলি উচ্ছেদের দাবিতে অনশনে বসলেন খোদ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে ন্যাকের মূল্যায়ণে বি-প্লাস গ্রেড পেয়েছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। তখন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যায়নের প্রশ্নে শূন্য পেয়েছিল রবীন্দ্রনাথের সাধের বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০২০ সালে ফের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মূল্যায়ণের কাজ শুরু করবে ন্যাক। তাই এবার ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যায়নের উপরই সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এতটাই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখলমুক্ত করতে অনশনে বসলেন খোদ উপাচার্য। কারণ ন্যাকের মূল্যায়ণ যদি আশানুরূপ না হয়, সেক্ষেত্রে বিশ্বভারতীর আর্থিক অনুদান কমিয়ে দিতে পারে কেন্দ্র। এদিকে পুর্নবাসনের দাবিতে অনড় দোকান মালিকরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.