নন্দন দত্ত, বীরভূম: ফের বিতর্কে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে হেনস্তা করার অভিযোগ। এমনকি এক অধ্যাপককে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অশালীন মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ। অধ্যাপককে মা-বাবা তুলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে বলে দাবি করল অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফা। তাদের কাছে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চারটি ই-মেল সামনে এসেছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-মেল থেকে করা হয়েছে বলে দাবি অধ্যাপক সংগঠনের। নাম না করে অমর্ত্য সেনকে ফের ‘জমি দখলকারী’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে ওই চিঠিতে। যা নিয়ে জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্বভারতী চত্বরে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রধান হয়েও উপাচার্যের এই কদর্য ভাষা প্রয়োগ প্রসঙ্গে তীব্র নিন্দা করেছে অধ্যাপক সংগঠন-সহ প্রবীণ আশ্রমিক থেকে প্রাক্তনীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমনকি কেউ তাদের ই-মেল ব্যবহার করে দুস্কর্ম করেছে তেমন কেউ বলেনি। উল্লেখ্য, অধ্যাপক সংগঠন বিশ্বভারতীর বর্তমান অবস্থার জন্য উপাচার্যকে দায়ী করে ই-মেল মারফত একটি চিঠি দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই শুক্রবার অধ্যাপক সংগঠনের পালটা উত্তর দেয় উপাচার্য। প্রশ্ন উঠছে, যে ভাষায় উত্তর দেওয়া হয়েছে তা দেখে স্তম্ভিত অধ্যাপকরা।
ই-মেলে লেখা হয়েছে, “এই বদমাইশ কারা, যারা তাদের পরিচয় গোপন করতে পছন্দ করে। তাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা যাদের হাত ধরে তারা এই ‘সংস্কারের’ জন্য আরও বেশি দায়ী।” একদিকে অধ্যাপকদের পূর্বপুরুষদের অবমাননাকর ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে। সেই পরিবারের সংস্কার নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি লিখেন এই মহান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে বলছি তারা যেন ইঁদুরের মতো আচরণ না করে। এরা ক্ষুধার্ত বিড়ালকে দেখলেই ভয় পায়। সুতরাং, তাদের উপেক্ষা করা ভাল। এরা অবাধ্য হলে বারবার শোকজ নোটিস দেওয়া হবে। বিশ্বভারতীর আইন অনুযায়ী তারা যদি দোষী সাব্যস্ত হন তাদের কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। এই বদমাইশদের শীঘ্রই বিশ্বভারতী থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে অর্থনীতিবিদ নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের নাম না করে তাঁকে ‘জমি দখলকারী’ বলে নিশানা করা হয়েছে ওই ই-মেল বার্তায়। সেখানে হুমকি সুরে বলা হয়েছে তিনি যতই বিশ্বখ্যাত হোন না কেন, তাঁকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। আইন অনুযায়ী তিনি তাঁর জমি ফেরত দিতে বাধ্য হবেন। পাশাপাশি বিশ্বভারতীর ন্যাক ও এনআইআরএফ এর অবনমনের জন্য নিজের দায় ঝেড়ে ফেলে অধ্যাপকদের দায়ী করেছেন উপাচার্য। যদিও অধ্যাপক সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-মেল থেকে অধ্যাপকদের বাবা-মা তুলে গালি দিচ্ছেন উপাচার্য। নিন্দার ভাষা নেই।” বিশ্বভারতীর কর্মীদের একাংশ বলছেন, উপাচার্য বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চাপে পড়েই দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। মাথা ঠিক রাখতে পারছেন না তাই উলটোপালটা করে ফেলছেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ই-মেলের চারটি বার্তা প্রসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.