সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বভারতী কাণ্ডে এবার নয়া অভিযোগ উঠল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তথা উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। ‘মেলা সংলগ্ন মাঠটিকে যৌনাচারের জন্য, বিশেষ করে বেশ্যাবৃত্তির কাজে লাগানো হয়।’ গত বুধবার একটি বিবৃতিতে এমনই মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva-Bharati University) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আর এজন্য কর্তৃপক্ষ তথা উপাচার্যকে ক্ষমা চাইতে হবে। শুক্রবার এমনটাই দাবি জানাল বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি এবং বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ।
এই প্রসঙ্গে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সচিব সুনীল সিংয়ের দাবি, পৌষমেলা প্রাঙ্গন নিয়ে মিথ্যে কথা বলছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। মেলার উলটোদিকেই বোলপুর থানা। এছাড়া এই মেলার নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় বেসরকারি সংস্থার হাতে। তাই গোটা মেলা প্রাঙ্গনেই নিরাপত্তা কর্মীরা থাকেন। সুনীলবাবুর কথায়, ‘‘এত নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশ থাকার পরও কেউ কীভাবে ওই ধরনের বেআইনি কাজ করতে পারে? স্থানীয়রা যাঁরা মেলাপ্রাঙ্গনে পাঁচিল দেওয়ার বিরোধিতা করেছে, তাঁদের নামে মিথ্যে বলা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে এজন্য ক্ষমা চাইতে হবে।’’ অন্যদিকে, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের বক্তব্য, এই ধরনের মন্তব্য আসলে বিখ্যাত এই পৌষমেলা এবং তাতে অংশগ্রহণকারীদের কলঙ্কিত করার চেষ্টা। সংগঠনের সভাপতি সমিরুল ইসলামের কথায়, ‘‘এটা বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা। উপাচার্যকে এধরনের মন্তব্য করার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছি। দরকার হলে বিক্ষোভও দেখাব।’’ যদিও এ ব্যাপারে উপাচার্যের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত সোমবার, শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠে উপাচার্য নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পাঁচিল তোলার কাজ করছিলেন। কিন্তু স্থানীয়দের একাংশ রীতিমতো পে-লোডার নিয়ে গিয়ে তা ভেঙে দেয়। পড়াশোনার মুক্ত পরিবেশে কেন পাঁচিল উঠবে, এই প্রশ্ন তুলেই ভেঙে ফেলা হয় নির্মাণ। এই ঘটনা ঘিরে এবার নজিরবিহীন এক পরিস্থিতির মুখে পড়ে দেশের ঐতিহ্যমণ্ডিত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী। সেই জল এখনই গড়িয়েছে অনেকটা দূর। ঘটনায় রাজনীতির রং লাগার অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে (PMO) নালিশ ঠুকেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এরপর বুধবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়। সেখানেই বলা হয়, ‘‘যারা ওই মেলাপ্রাঙ্গনে অসামাজিক কাজকর্মে লিপ্ত থাকে, তারা যাতে সেখানে প্রবেশ করতে পারে, সেজন্য মেলাপ্রাঙ্গনে পাঁচিল দেওয়ার কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেলার মাঠের সামান্য একটি দোকান থেকে কখনও মদের বোতল, ব্যবহার করা কন্ডোম, আবার কখনও গাঁজা, ফেলে দেওয়া খাবার–দাবার পাওয়া যায়।’’ এরপরই বিষয়টি নিয়ে তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.