ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: চূড়ান্ত অনিশ্চিয়তার পর দোলের দিনই বসন্তোৎসবে হতে চলেছে শান্তিনিকেতনে। আশ্রম মাঠ থেকে বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান সরিয়ে পৌষমেলার মাঠে করা হবে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন তরফে প্রশাসনিক সাহায্যের পাশাপাশি বসন্ত উৎসবের সমস্ত খরচ বহনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করবে। সাংস্কৃতিক দিকটা বিশ্বভারতী দেখবে, আর বাকিটা দেখবে জেলা প্রশাসন। এই বিষয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, “বসন্ত উৎসবের সঙ্গে বাঙালিদের আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল দোলের দিন বসন্ত উৎসব হোক। কিন্তু গত বছর যে কাণ্ড ঘটে ছিল তা থেকে মুক্তি পেতে রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম।”
বসন্ত উৎসব নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগের কনফারেন্স হলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায়, কর্মসমিতিতে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যরা। জেলা প্রশাসনের তরফে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা, জেলা পুলিশসুপার শ্যাম সিং-সহ বিভিন্ন আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত, প্রায় তিন ঘন্টা বৈঠক চলে।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে বসন্ত উৎসব প্রায় ২ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে আশ্রম মাঠ থেকে বের হওয়ার বিভিন্ন রাস্তায় হয় জনজোয়ার। প্রায় এক ঘন্টার বেশি মানুষ একই জায়গায় আটকে পড়েন। এবার এই পরিস্থিতি যাতে না হয় তার জন্য আশ্রম মাঠ থেকে বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠান অপেক্ষাকৃত ফাঁকা পৌষমেলার মাঠে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রসঙ্গত ২০১৪ সালে বসন্ত উৎসব পৌষমেলার মাঠে সরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু এত মানুষ সেবার উৎসবে এসেছিলেন যে অনুষ্ঠান করাই কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই উৎসব আশ্রম মাঠে সরিয়ে আনা হয়।
একইভাবে সূত্রে খবর, এই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের তরফে বিশ্বভারতীকে জানিয়ে দেওয়া হয়, উৎসবের পুলিশি ব্যবস্থা থেকে সব ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা করবে জেলাপ্রশাসন। বিশ্বভারতী শুধু অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে। এমনকি অনুষ্ঠান করতে যা খরচ হবে তা দেবে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, গত বছর বসন্ত উৎসব করতে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে ছিল। এই বিষয়ে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, বসন্ত উৎসবে জেলা প্রশাসনের তরফে পুলিশি সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি পরিকাঠামোগত সব ধরনের সাহায্য দেবে জেলা প্রশাসন। বিশ্বভারতী চিঠিতে আর্থিক সাহায্যের কথা বলেছিল, সেটা করতেও জেলা প্রশাসন রাজি। রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জেলা পুলিশ আশ্রম মাঠে ভিড় এড়াতে পৌষমেলার মাঠে করতে চাইছে। বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ এই বিষয়ে রাজি হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.