কিংশুক প্রামাণিক: দমদমের বৃদ্ধের পর রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন ৪৫ বছরের এক মহিলা। রবিবার রাতেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আক্রান্ত হয়ে ভরতি থাকা এই মহিলা। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর নয়া চিন্তা ভাবাচ্ছে তাঁর পরিজনেদের। মহিলার শেষকৃত্য করা নিয়েই নানা প্রশ্ন ঘুরছে তাঁদের মনে। করোনা আক্রান্ত রোগীর সৎকার করতে হবে ধাপা বা পূর্ব কলকাতার বাগমারি কবরস্থানে। দমদমের বৃদ্ধের মৃত্যুর পর এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে।
রবিবার গভীর রাতেই মারা যান কালিম্পংয়ের গরুবাথান ব্লকের বাসিন্দা বছর ৪৫-এর মহিলা। তাঁর মৃত্যুতে একদিকে যেমন শোকের পরিবেশ তাঁর পরিবারে, তেমনই আতঙ্ক ছড়িয়েছে কালিম্পং শহরে। অন্যদিকে মহিলার মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্য কীভাবে হবে তা নিয়ে প্রশ্নে পড়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। দমদমের বৃদ্ধ মারা যাওয়ার পর তাঁর শেষকৃত্য নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। নিমতলা শ্মশানঘাটে নিয়ে গেলে স্থানীয়রা হুজুগের বশে ঝামেলা বাধায়। তাদের ধারণা ছিল, করোনায় মৃত রোগীর দেহ বৈদ্যুতিক চুল্লিতে পোড়ালেও নাকি আশেপাশের বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে সেই মারণ ভাইরাস। তাই তারা ৩ ঘণ্টা আটকে রাখে বৃদ্ধের দেহ। পরে অশান্তি রুখতে পুলিশের তৎপরতায় ও কলকাতা পুরসভায় তত্ত্বাবধানে ধাপার মাঠেই বৃদ্ধের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবার থেকে করোনায় আক্রান্ত কোনও রোগীর মৃত্যু হলে ধাপায় দাহ ও পূর্ব কলকাতার বাগমারি কবরস্থানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তবে সমস্যা হল উত্তরবঙ্গে কোনও ধাপার মাঠ নেই। ফলে মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হলে কি এবার তাঁর দেহ কলকাতায় ধাপার মাঠে নিয়ে আসা হবে? সেক্ষেত্রে যে গাড়িতে করে নিয়ে আসা হবে সেই গাড়ি থেকেও ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। তাহলে স্থানীয় প্রশাসন এখন কী পদক্ষেপ নেবে সেই নিয়েই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
তবে করোনায় মৃতকে ইলেক্ট্রিক চুল্লিতে পোড়ালে তার থেকে ভাইরাস বাতাস ছড়ায় না, একথা আগেই জানিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে এই মারণ ভাইরাস নিয়ে মানুষের আতঙ্ককে চট করে দূর করা সম্ভব নয়। তাই ধাপার মাঠেই করোনা আক্রান্ত মৃতের শেষকৃত্য করার কথা জানিয়েছিলেন। আর বাগমারির কবরস্থানের ভিতরেই আলাদা জায়গা ঘিরে দেওয়া হয় সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের মৃতকে সমাধিস্থ করার কথা জানান। তবে উত্তরবঙ্গের মহিলাকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রশাসন কী সিদ্ধান্ত নেবে শোকের মহলেও সেই দিকেই তাকিয়ে মৃতার পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.