সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ভারত-বাংলাদেশের জলসীমায় ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ এক মৎস্যজীবী। ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত হয়ে তিনি ভরতি হাসপাতালে। সুন্দরবনের গুলিবিদ্ধ মাঝি নিরঞ্জন দাসের ধারণা, তাঁদের ট্রলার লক্ষ্য করে যারা গুলি চালাচ্ছিল সম্ভবত তারা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জওয়ান। কারণ কাছেই দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজ। তবে কেন বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাঁদের দিকে ধেয়ে এল আর কেনই বা ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি চলল, সে ব্যাপারে এখনও পুরোপুরি অন্ধকারে তিনি।
বৃহস্পতিবার ভোরে সুন্দরবনের কেঁদো দ্বীপের কাছে ভারত-বাংলাদেশ জলসীমায় এফবি রুদ্রজ্যোতি নামে একটি ট্রলার চালাচ্ছিলেন নিরঞ্জন দাস নামে এক মৎস্যজীবী। তাঁর সঙ্গে আরও ১২ জন ছিলেন। আচমকাই তাঁরা লক্ষ্য করে একটি নৌকায় চড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন তাঁদের ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালাতে চালাতে এগিয়ে আসছে। তাদের পরনে ছিল কালো পোশাক। গুলিবৃষ্টি দেখে মৎস্যজীবীরা ট্রলারের ভিতরের কেবিনে ঢুকে যান। ট্রলারের চালক ছেচল্লিশের নিরঞ্জন দাস গুলি থেকে বাঁচতে পারেননি। কেঁদো দ্বীপের কাছেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। ওই অবস্থায় ট্রলার চালিয়ে তিনি পাথরপ্রতিমার কাছে আসেন। অত্যন্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতাল ও পরে নিয়ে যাওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে। সেখানেই অপারেশন হয়। ডান পায়ের উরু থেকে গুলি বের করা হয়। তিনি আপাতত স্থিতিশীল। বাকি ১২ জন মৎস্যজীবী সকলেই সুরক্ষিত।
তবে কি রুদ্রজ্যোতি ট্রলারটি মাছ ধরতে ধরতে বাংলাদেশ জলসীমার ভিতর ঢুকে পড়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে গুলিবিদ্ধ ট্রলারের মাঝি জানান, জিপিএস দেখে তাঁরা নিশ্চিত যে তাঁরা যেখানে মাছ ধরছিলেন সেই জায়গাটি ভারতীয় জলসীমার মধ্যেই। তাই তাঁদের ওপর বাংলাদেশ নৌবাহিনী কেন হঠাৎ এই আক্রমণ চালালো তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা।
কাকদ্বীপ ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তাঁরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ওই ট্রলারের মৎস্যজীবীদের কথা অনুযায়ী আক্রমণকারীরা সত্যিই যদি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জওয়ান হয়ে থাকে তবে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। কারণ, বাংলাদেশ জলসীমায় ঢুকে না পড়া সত্বেও যেভাবে রুদ্রজ্যোতি ট্রলারটির ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে তা ভয়ঙ্কর এবং অন্যায় কাজ। সমস্ত ঘটনার কথা মৎস্য দপ্তরকে জানানো হয়েছে। মৎস্য দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা বিষয়টি তলিয়ে দেখছেন বলে সূত্রের খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.