রিংকি দাস ভট্টাচার্য: পালটে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি পরিচিত প্রতীক চিহ্ন। স্বাধীনতার পর এই প্রথম। বিশ্ববিদ্যালয়-সূত্রে খবর, সত্তর বছরেরও বেশি সময় পর ‘এমব্লেম’ বা প্রতীক চিহ্ন বদল করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে সোমবার সেনেট বৈঠকে। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ম মেনে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হচ্ছে ইউজিসি-র কাছে। ইউজিসি থেকে চূড়ান্ত সিলমোহর পেলেই নতুন ‘এমব্লেম’ দিনের আলো দেখবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশা, সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী ১১ জানুয়ারি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কৃতীদের হাতে তুলে দেওয়া শংসাপত্রে শোভা পাবে নতুন ‘এমব্লেম’। উল্লেখ্য, এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সাম্মানিক ডিলিট পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[দাঁড়ি পড়ছে দক্ষিণেশ্বর-বেলুড়মঠ ফেরি পরিষেবায়, চাকরি পাচ্ছেন মাঝিরা]
১৮৫৭ সালে এশিয়া মহাদেশের প্রথম বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা শুরু। ১৬০ বছরে মোট ছ’বার পালটেছে মহাদেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতীক চিহ্ন বা ‘এমব্লেম’। সবই অবশ্য ১৯৪৭ সালে দেশের স্বাধীনতার আগে। এতদিন সেই ‘পদ্মলাঞ্ছিত’ এমব্লেম বা প্রতীক চিহ্ন পরিবর্তনের প্রয়োজন বোধ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছর ট্র্যাডিশন ভেঙে সেই ভাবনায় বদল আনার পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে লোগো পরিবর্তনের ভাবনাচিন্তার প্রসঙ্গ ওঠে। এরপর সেটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় সেনেট বৈঠকে। এদিন সেনেটে দীর্ঘক্ষণ এই পরিকল্পনার কথা আলোচনা পর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় ইউজিসির কাছে। কর্তৃপক্ষের আশা, ইউজিসি খুব শীঘ্রই এই ভাবনায় চূড়ান্ত সিলমোহর দেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান লোগোটি সপ্তম লোগো হলেও, স্বাধীনতার পর এটি পরিবর্তন করা হয়নি। সেনেট সদস্য সূত্রে খবর, সমাবর্তন অনুষ্ঠানের শংসাপত্রে নতুন এমব্লেম ব্যবহারের পরিকল্পনা থেকেই তড়িঘড়ি সেনেট ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী ১১ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডিলিট দেওয়া হবে। সাম্মানিক ডিলিট প্রাপ্তির সুবাদে তিনিই প্রথম পাবেন শংসাপত্র। সুত্রের খবর, এমব্লেম বদল হওয়ার কারণে ওইদিন প্রদেয় ৮৫০টি ডিপ্লোমা সার্টিফিকেটের সবক’টিই পুনর্মুদ্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
[লোকসান আটকাতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ন্যূনতম ভাড়া হবে ১০ টাকা]
১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার পর প্রথম এমব্লেমটি চালু করা হয়। ওই বছরই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে ভারতের শাসন ক্ষমতা চলে যায় সরাসরি ব্রিটিশ সরকার তথা রানি ভিক্টোরিয়ার হাতে। যার ফলশ্রুতিতে কয়েক বছরের মধ্যে রানিকে সম্মান জানিয়ে দ্বিতীয় এমব্লেম চালু করা হয়। এরপর ১৯৩০ এবং ১৯৩৪ সালে দু’বার করে মোট চারবার পরিবর্তিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমব্লেম। ১৯৩৪ সালে ষষ্ঠ এমব্লেম তৈরির সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব লার্নিং’ লেখা থেকে ‘দ্য’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। এরপর স্বাধীনতার আগে ষষ্ঠ এমব্লেমটি পরিমার্জিত করে সপ্তম এমব্লেম তৈরি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর আর পরিবর্তন হয়নি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী এমব্লেম।
[বড়দিনে বাঙালির শীতভাগ্য কেমন? জানালেন হাওয়া অফিসের কর্তারা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.