Advertisement
Advertisement
করোনা

অভিনব উদ্যোগ, করোনা প্রতিরোধক গ্রাম গড়ছে পুরুলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়

বনৌষধির গাছ বিলির পাশাপাশি যোগাভ্যাস শেখাচ্ছেন অধ্যাপকরা।

University from Purulia fighting against COVID-19 in a new way
Published by: Paramita Paul
  • Posted:May 13, 2020 12:06 pm
  • Updated:May 13, 2020 2:15 pm  

দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা প্রতিরোধক  গ্রাম গড়ছে পুরুলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। অভিনব এই গ্রাম গড়ার কাজ শুরু করল সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়। যে মহান বিপ্লবীদের নামে রাজ্যের এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ, তাঁরা একসময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ উচ্ছেদের লড়াই শুরু করেছিলেন। করোনা মহামারি নিকেশে এক অন্য লড়াই শুরু করল পুরুলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাঁদের সেই উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়েছেন গোটা জেলার বাসিন্দারা।

জানা গিয়েছে, করোনা প্রতিরোধক গ্রাম হবে দুই রকম। প্রথমটি রোগ প্রতিরোধক গ্রাম। দ্বিতীয়টি বনৌষধি গ্রাম। পুরুলিয়া এক ব্লকের বড়াঘটু গ্রামে ২৯টি সাঁওতাল পরিবারের
বাস। এখান থেকে শুরু হয়েছে অভিযান। সাঁওতাল পরিবারগুলির চাষের কিছুটা জমি আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আদা, হলুদ, তুলসীর মত ভেষজ উদ্ভিদের অঙ্কুরিত বীজ বিলি করা হয়েছে। পরিবারগুলির হাতে দেওয়া হয়েছে ডিটারজেন্ট, সাবান ও মাস্ক। এই গ্রামটিকে ‘ইমিউন ভিলেজ’ বা রোগ প্রতিরোধক গ্রাম  হিসাবে গড়ে তোলা হবে। অন্যদিকে, জয়পুর ব্লকের একদুয়ার গ্রামে শুরু হয়েছে অন্য ধারাটি। এখানে বাস করে ৯৭টি আদিবাসী পরিবার। ভূমিপুত্রদের হাতে তুলসী, হলুদ, আদা, গোলমরিচ, দারচিনি, লবঙ্গ গাছের চারা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি, এখানে যোগব্যায়াম প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন : সুস্থ সন্তানের জন্ম দিলেন করোনা আক্রান্ত প্রসূতি, দুশ্চিন্তামুক্ত পরিবার]

এপ্রসঙ্গে সিধো-কানহু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দীপক কর জানিয়েছেন, “প্রথম ধাপে বিভিন্ন প্রাণায়াম ও সূর্য প্রণাম শেখানো চলছে। রোগ প্রতিরোধে যা খুব কার্যকর। গোটা পুরুলিয়া জুড়ে আমরা করোনা মোকাবিলায় এই কাজ করব।” তিনি জানিয়েছেন, লকডাউন চললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্স চলছে। লকডাউনের পর প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী, কর্মী, আধিকারিক ও অধ্যাপকদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক পরা আবশ্যিক।

[আরও পড়ুন : লকডাউনেও অব্যাহত তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ধারালো অস্ত্রের কোপে প্রাণ হারালেন এক দলীয় কর্মী]

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পূর্ব ভারতের ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামকে রোগ প্রতিরোধক এবং বনৌষধি গ্রামে
রূপান্তরিত করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়ায় সেই কাজ রূপায়নের দায়িত্ব পেয়েছে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পাশাপাশি আরোও কিছু জনমুখী কাজ করে চলেছেন দীপকবাবুরা।ইতিমধ্যে স্নাতকোত্তরের সিলেবাসে কোভিড-১৯ (COVID-19) ঢোকানো হয়েছে। তার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৫০ নম্বর। প্রান্তিক মানুষের সেবাও করে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। চলছে ই-লার্নিং। ছৌ নাচ নিয়ে আলাদা কাজ চলছে। অযোধ্যা পাহাড়ের দুর্গম গ্রামের ভিতরে গিয়ে ছাত্রছাত্রী কর্মী ও অধ্যাপকরা তুলে দিচ্ছেন খাদ্যসামগ্রী।

উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সুব্রত রাহা জানিয়েছেন, “আড়শা ব্লকে একটি আবাসিক স্কুল আছে। আমরা সেই স্কুলটিকে রোগ প্রতিরোধক বিদ্যালয় হিসাবে গড়ে তুলছি।” উল্লেখ্য, অনাথ শিশুদের নিয়ে এই আবাসিক স্কুলটি চালান লোকসংগীত শিল্পী নরেন হাঁসদা। ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। খুদে পড়ুয়াদের
ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement