নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরাক্কা: ফিকে হয়ে গিয়েছে জৌলুস। অতিথিদের আনাগোনাও কমেছে। তবুও আজও রীতি মেনে জঙ্গিপুরের মহাবীরতলার জমিদার চেতিলাল সিংহের বাড়িতে পূজিতা হন দেবী দুর্গা। নিয়ম মেনে আজও সন্ধিপুজোর শুরুর আগে দুটি বন্দুক থেকে দু’ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। গাছ থেকে পড়ে দুটি বেল।
জঙ্গিপুরের মহাবীরতলার জমিদার ছিলেন চেতিলাল সিংহ। জঙ্গিপুর (Jangipur) থেকে সুতির সাদেকপুর পর্যন্ত ছিল তাঁর এলাকা। আজ থেকে ৩৫৩ বছর আগে জঙ্গিপুরের বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন চেতিলাল সিংহ। তবে নিয়ম ছিল অন্য। সিংহবাড়ির পুজোয় অন্ন ভোগ নিবেদন করা হয় না দেবীকে। ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় ফল, লুচি ও মিষ্টি ভোগ। সিংহ বাড়ির দুর্গাপুজোয় একমাএ সপ্তমীর রাতেই ১০.৫৭ মিনিট থেকে ১২.১৫ পর্যন্ত ‘মহানিশা’ বা শত্রু বিনাশের পুজোর প্রচলন রয়েছে।
সিংহ বাড়ির বর্তমান সদস্য শিবজ্যোতি সিংহ জানান, জমিদার চেতিলাল সিংহ স্বপ্নে দেবীর নির্দেশে এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন। আগে পুজো হত আটচালা মন্দিরে। পরবর্তীতে দেবীর নাটমন্দির গড়ে তোলা হয়েছে। সিংহ বাড়ির দুর্গাপুজোয় সন্ধি পুজোর আগে আজও গাছ থেকে দু’টি জোড়া বেল পড়ে। তারপর দু’টি বন্দুক থেকে দু’রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে সন্ধিপুজো শুরু হয়। কিন্তু এই বাড়ির পুজোয় বলি প্রথা নেই। সিংহ পরিবারে পুজোর জৌলুস কমলেও প্রাচীন রীতি মেনে আজও নিষ্ঠার সঙ্গে পূজিতা হন দেবী।
আগে পুজোর ক’ দিন সিংহবাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও নিমন্ত্রিতদের আনাগোনায় গমগম করত। আজও দূর দূরান্ত থেকে পরিজনরা আসেন। আগে দশমীর দিন সমস্ত প্রতিমা আনা হত সিংহ বাড়ির নাট মন্দিরে। রাত পর্যন্ত চলত আসর। সেখান থেকেই একে একে শুরু হত ভাগীরথী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন হত। সেই নিয়ম এখন আর নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.