সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: ‘‘খেয়াল রাখবেন, আগামী ১৪ তারিখ আপনাকে একটি মশাও যেন কামড়াতে না পারে৷ এই মশা ভয়ংকর মশা৷ কামড়ালেই ম্যালেরিয়া৷ তাই প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে ও মশারি টাঙান৷’’ বাগনানে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এরকমই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে বিজেপি সম্পর্কে সতর্ক করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷
‘মশারি’ টাঙানোর পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি এদিন আরও বলেন, ‘‘কেউ দাঁত দেখালে শুনবেন না, চোখ রাঙালে মানবেন না৷ জোরে কথায় ভয় পাবেন না। কারণ ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই, আমরা তৃণমূল কংগ্রেস৷’’ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতবর্ষকে দিশা দেখাবেন, তাই আমরা ও আপনারা সকলেই এক৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন৷ মানুষের জন্য একের পর এক উন্নয়ন স্থাপন করেন৷ বিরোধীরা তাঁর সমালোচনা করেন৷ তাঁরা যদি দেখতে চান, তাহলে তাঁদের গ্রাম ঘুরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়ন দেখিয়ে দিতে পারব৷ কিন্তু তাঁরা এসব দেখতে চান না৷ তাঁরা শুধু কুৎসা রটাতে জানেন৷ মানুষ এসব কুৎসা বিশ্বাস করে না।’’ আসন্ন নির্বাচনে তাই বিরোধীদের এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া চলবে না বলে তৃণমূল কর্মীদের পরামর্শ দেন অনুব্রত।
বীরভূম, বর্ধমান জেলা পরিষদ তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীরা নানা রকম অভিযোগ তুলছেন৷ কিন্তু তারা যদি প্রার্থী দিতে না পারেন, মানুষ যদি তাদের প্রার্থী হতে না চায় সেই দায়ও কি আমার?’’
এদিনের সভায় নিজের বক্তব্য পেশ করেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীদের জন্য খুব দুঃখ হচ্ছে৷ ওঁরা অনেক চেষ্টা করেছিল নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে৷ কিন্তু আদালত সেটা হতে দেয়নি। তাদের থোতা মুখ ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। আমরা দুঃখিত তাদের চোখের জল মোছাতে পারছি না৷’’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘সুজন, মান্নান, অধীরের মত কিছু নেতা নিজেদের বাড়ির লোকেদের কাছে বড় নেতা সাজার জন্য টিভিতে এসে মুখ দেখান। মাঠে ঘাটে আর এঁদের দেখা যায় না। প্রতিটি নির্বাচন এলেই টিভিওয়ালারা আর বিরোধীরা নাটক শুরু করে দেন। এখন তাঁরা সন্ত্রাস-সন্ত্রাস নাটক শুরু করেছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন বিজেপির নতুন বোতলে সিপিএমের পুরনো মদ দেখা যাচ্ছে। এক তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিলেন৷ কিন্তু তিনি তাঁর নিজের ছেলেকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। এই হচ্ছে বিজেপির অবস্থা। মাঠের সাইড বেঞ্চে ল্যাংড়া প্লেয়ারদের নিয়ে তৈরি একটা দল। এরা ধর্ম নিয়ে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করতে চাইছে, কিন্তু এ রাজ্যকে কিছুতেই উত্তরপ্রদেশ গুজরাট হতে দেব না৷ এই রাজ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংহতির রাজ্য৷ বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছেন। তিনি মানুষ ছাড়া আর কাউকেই ভয় পান না।’’ এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি পুলক রায় বাগনানের বিধায়ক রাজা সেন প্রমুখ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.