Advertisement
Advertisement

Breaking News

শর্ত পূরণ হয়নি, ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষার অনুমোদন বাতিল ইউজিসি-র

ইউজিসির সিদ্ধান্তের জেরে বতর্মানে দূরশিক্ষার পড়ুয়াদের কোনও অসুবিধা হবে না।

UGC scraps distance education courses of 4 Bengal Universities
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:August 11, 2018 12:33 pm
  • Updated:August 11, 2018 12:33 pm  

রিংকি দাস ভট্টাচার্য: শর্ত পূরণ হয়নি। তাই রাজ্যের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষার অনুমোদন বাতিল করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। রবীন্দ্রভারতী, বিদ্যাসাগর, কল্যাণী ও উত্তরবঙ্গ- এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা অনুমোদন বাতিল হওয়ায় আগামী শিক্ষাবর্ষে সেখানে ওই কার্যক্রমে পড়ুয়া ভরতি হতে পারবে কি না তা নিয়ে গভীর সংশয় দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের আরও যে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, সেই নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশ্য এই অনুমোদন বহাল রেখেছ ইউজিসি।

কিন্তু চারটি বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন সুযোগ দেওয়া হল না, ইউজিসির তরফে তা স্পষ্ট করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অবশ্য জানিয়েছেন, ইউজিসির সিদ্ধান্তের জেরে বতর্মানে দূরশিক্ষার পড়ুয়াদের কোনও অসুবিধা হবে না। যদিও নতুন করে অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত আগামী শিক্ষাবর্ষে কোনও ভরতি নেওয়া হবে না।

Advertisement

বস্তুত, দূরশিক্ষায় অনুমোদনের ক্ষেত্রে ইউজিসির নিয়মনিধি বিলক্ষণ কঠোর। তা পুরোপুরি মানা হয়নি বলেই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্রাত্য রাখা হয়েছে বলে ইউজিসি সূত্রের ইঙ্গিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং স্থির হয় পরিকাঠামো, শিক্ষার মান-সহ একাধিক বিষয়ের ভিত্তিতে। দূরশিক্ষার অনুমোদন বাতিল হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ইউজিসি অবশ্য নতুন করে প্রেজেনটেশন দেওয়ার জন্য এক মাস সময় দিয়েছে। সংকটের সমাধানসূত্র খুঁজতে সংশ্লিষ্ট চার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দিল্লি যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

প্রয়োজনের কথা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানান, চাহিদা পূরণের আশ্বাস অনুব্রতর ]

এ বিষয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরি বলেন, ইউজিসি ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছে। এর মধ্যে আমরা ফের আবেদন করব। একই সুর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীরও। “সারা দেশে ৬৫টি বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদ দেওয়া হয়েছে। ৫৩টি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেয়েছে। নতুন করে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। আমরা ফের আবেদন করব।”-বক্তব্য রঞ্জনবাবুর। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ড: দিলীপকুমার সরকারের কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পঠনপাঠন-সহ পরিকাঠামোগত সংস্কারের শর্ত দিয়েছে ইউজিসি। ৩১ আগস্টের মধ্যে ওই শর্তপূরণের নথিপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী দূরশিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টর নিযুক্ত থেকে শুরু করে সিলেবাসের বদল, প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে।” পড়ুয়াদের এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেই জানিয়েছেন তিনি।

এই বছরেই ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে দূরশিক্ষা সংক্রান্ত বিধি ২০১৭ সংশোধন করে নতুন বিধি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। যেখানে স্পষ্ট ভাবে বলা ছিল, দূরশিক্ষার জন্য যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাকের মূল্যায়নে ন্যূনতম ৩.২৬ রেটিং থাকতে হবে। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষা থাকলেও, পর্যাপ্ত রেটিং নেই। তাই ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে দূরশিক্ষা ব্যবস্থা হারানোর আশঙ্কা ঘনিয়ে এসেছিল। বর্তমানে ন্যাকের মূল্যায়নে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ ৩.১০, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩.১২, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ ২.৮৬। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাক রেটিং ও আবশ্যিক ৩.২৬-এর তুলনায় কম। অন্যদিকে, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাক স্বীকৃত নয়।

ঠান্ডা পানীয়ের বোতলে মিলল ছত্রাক, প্রস্তুতকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ]

দূরশিক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তার সম্মুখীন এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের অনুরোধে গোটা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই চিঠির জবাবে গত এপ্রিল মাসে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়েছিলেন, পরবর্তী ন্যাক পরিদর্শন পর্যন্ত দূরশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারবে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। আর দূরশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে আবেদন করতে হবে। সেই অনুযায়ী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে দূরশিক্ষা চালু রাখার আবেদন জানিয়েছিল রবীন্দ্রভারতী-সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও। কিন্তু, সেই আশায় কার্যত জল ঢেলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দূরশিক্ষা অনুমোদনের তালিকাটি। কারণ, রাজ্যের চারটি ব্রাত্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে অন্যতম এই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।

ইউজিসির এই সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্যের পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়বেন বলে মনে করছেন শিক্ষামহল। কারণ, প্রতি বছর রবীন্দ্রভারতী, বিদ্যাসাগর, উত্তরবঙ্গ ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষার কোর্সে প্রায় হাজার ষাটেক পড়ুয়া ভর্তি হন। অনুমোদন বাতিল হওয়ায় জেনারেল কোর্সে চাপ বাড়বে। একইসঙ্গে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও চাকরিজীবীরা এই সিদ্ধান্তের জেরে বঞ্চনার শিকার হবেন। প্রায় লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী প্রতি বছর দূরশিক্ষার কোর্সে ভরতি হন। উচ্চশিক্ষায় গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও কমে যাবে বলে আশঙ্কা শিক্ষাবিদদের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement