শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: প্রচার শুরুর আগেই প্রার্থীর প্রচার গাড়ির চাকা খুলে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। প্রতীক হিসেবে ফুটবল পেয়েও খেলতে নামার আগে ‘জোর কা ধাক্কা’য় হতাশ ময়নাগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী বিলাস সরকার। কীভাবে সারবেন প্রচার? ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না।
কথায় আছে, “খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হল এঁড়ে গরু কিনে!” জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ির নির্দল প্রার্থী বিলাস সরকারের অবস্থাও ঠিক একই রকম। সার আর ধানের ছোটখাটো ব্যবসা ছিল। তা দিয়েই স্বামী-স্ত্রীর নির্ঝঞ্ঝাট সংসার। ব্যবসার প্রয়োজনে একটা পিকআপ ভ্যান কিনেছিলেন বিলাস। তা দিয়ে কখনও সার, কখনও ধান আনা-নেওয়া করেন। আবার সময় পেলে স্ত্রীকে বসিয়ে লং ড্রাইভ। বেশ চলছিল।কিন্তু কাল হল ভোটে দাঁড়িয়ে। জানান, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে ভাবে রাজনীতি করেননি কোনও দিন। টিভির পর্দায় দাদা-দিদিদের বক্তব্য শুনতে বেশ ভালই লাগে। বন্ধুদের সঙ্গে গল্পে গল্পে সে কথা বলতেই ভোটে দাড়ানোর পরামর্শ দেন তাঁরা। শুনে আপত্তি করেননি স্ত্রীও। এক কথায় ইচ্ছেপূরণ করতেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে পড়লেন। প্রতীকটাও বেশ জবরদস্ত। ফুটবল। কিন্তু খেলা শুরুর আগেই ধাক্কা।
জানা গিয়েছে, পিকআপ ভ্যানকে প্রচার গাড়ি হিসেবে ব্যবহারের কথা ভেবে রেখেছিলেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন গাড়ির পিছনের দুটো চাকা চুরি করে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। জানান, কারও সাতে-পাঁচে না থাকলেও ভোটে দাঁড়ানোর পর থেকে নানাভাবে তাঁর উপর চাপ আসছিল। কিন্তু কারা তারা, কোন দলের সমর্থক, বলতে পারছেন না বিলাসবাবু। তবে তারাই রাতের অন্ধকারে এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিলাসবাবুর স্ত্রী। স্ত্রীর চাপে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ময়নাগুড়ি বিধানসভার খাগড়াবাড়ি দু’ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দাড়িকা মারির বাসিন্দা বিলাস সরকার। জানান, দুটো চাকার দাম কম করে কুড়ি হাজার টাকা। প্রচারে গাড়ি দরকার। কিন্তু ঘটনার পর বিলাসবাবুর স্ত্রী গাড়ি বের করতে দিতে আপত্তি করছেন। উদ্বিগ্ন নিজেও। তাই প্রতীকটা ফুটবল পেলেও খেলাটা কীভাবে শুরু করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না নির্দল প্রার্থী বিলাস সরকার। তবে পুলিশের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে তাঁকে। ময়নাগুড়ি থানার আইসি ভূষণ ছেত্রী জানান, এর পিছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ নেই। স্থানীয় চোরেরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.