ধীমান রায়, কাটোয়া: নিয়ম অনুযায়ী বাড়িভাড়া অগ্রিম দিতে হত। হাতে যেটুকু টাকা ছিল তা দিয়ে এপ্রিল মাসের অগ্রিম ভাড়া মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু চলতি মাসের টাকা অগ্রিম না দেওয়ায় বাড়িমালিক আর ঘরে থাকতেই দেননি। ফলে ভাড়ার ঘর ছেড়ে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থেকে রেলপথ ধরে হাঁটা শুরু করেছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার দুই যুবক। রবিবার দুপুর নাগাদ কাটোয়া পর্যন্ত আসার পর খবর পায় পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের তৎপরতায় এদিন খাওয়াদাওয়া করিয়ে ওই দুই যুবককে গাড়ি করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হল। আরিফ শেখ ও পার্থ মণ্ডল নামে ওই দুই যুবক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন পুলিশকে।
মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া এলাকায় বাড়ি আরিফের। পার্থর বাড়ি ওই জেলার বেলডাঙ্গায়। তারা জানান দুর্গাপুরে একটি সংস্থার সেলসম্যান হিসাবে কাজ করেন তারা। কোকওভেন থানা একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। ৮ জন কর্মী মিলে একটি বাড়িতে ৬০০০ টাকার ভাড়াচুক্তিতে তিনটি ঘর নিয়ে থাকতেন। পার্থ বলেন, “ওই বাড়ি মালিককে প্রতিমাসের শেষের দিকে অগ্রিম ভাড়া মেটাতে হত। মার্চ মাসের শেষে এপ্রিলের ভাড়া মিটিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু লকডাউনের জন্য আমরা বেতন পাইনি। তাই মে মাসের অগ্রিম ভাড়া দিতে পারিনি। গত বৃহস্পতিবার মাসের শেষদিনে আমাদের ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।”আরিফ বলেন, “ওইদিন রাতে আমরা কয়েকটি জায়গায় যাই। কেউ থাকতে দেয়নি। খাবারের টাকাও শেষ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই দুর্গাপুর রেলস্টেশন থেকে বর্ধমান মুখে হাঁটা শুরু করি।”
আরিফ জানান শনিবার তারা বর্ধমান স্টেশনে পৌঁছনোর পর একটু বিশ্রাম নিয়ে ফের বর্ধমান-কাটোয়া রেলপথ ধরে কাটোয়ার দিকে হাঁটা শুরু করেন। রবিবার কাটোয়া ডাকবাংলো রোডের কাছে ক্লান্ত হয়ে বসেছিলেন। তখন কোনওভাবে পুলিশ সুপারের কাছে খবর যায়। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় কাটোয়া থানার আইসিকে নির্দেশ দিলে দুই যুবককে উদ্ধার করা হয়। আইসি বিকাশ দত্ত জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই দুই যুবককে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসা হয়েছে।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.