ছবি: প্রতীকী
তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: রাজ্যে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের (Black Fungus) থাবা। এবার প্রাণহানি উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হল এক মহিলার। গজলডোবার বাসিন্দা আরেক মহিলাও একই কারণে প্রাণ হারালেন।
জানা গিয়েছে, নিহত ওই মহিলা শিলিগুড়ির প্রধাননগরের বাসিন্দা। সম্প্রতি তাঁর চোখে সমস্যা দেখা দেয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় জানা যায় তিনি মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। উত্তরবঙ্গে প্রথম ওই মহিলার শরীরেই বাসা বাঁধে ছত্রাক। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। ছত্রাক বাসা বাঁধায় ডান চোখ এবং মুখের বেশিরভাগ অংশ বাদ দেওয়া হয়েছিল তাঁর। তারপর থেকে লাগাতার ওই হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভরতি ছিলেন মহিলা। তবে চিকিৎসায় সেভাবে সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। মঙ্গলবার রাতে শেষ হল তাঁর জীবনযুদ্ধ। এদিকে, গজলডোবার বাসিন্দা এক মহিলাও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের থাবায় বুধবার প্রাণ হারান।
রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে সন্দেহভাজন আক্রান্ত ৩৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। কোভিড হাসাপাতালগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে কমিটিও।
এসএসএকেএম, আরজি কর, মেডিক্যাল কলেড, বাঁকুড়া-সহ প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আলাদা করে ট্রিটমেন্ট প্রোটোকল তৈরি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত মাত্রাতিরিক্ত স্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে করোনা রোগীর শরীরে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠছে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বর-সহ একাধিক উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। একেবারে শুরুর দিকে এই রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। তবে ছত্রাক শরীরে বেশি দূর পর্যন্ত জাল বিস্তার করলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে উঠছে প্রাণঘাতী। তাই নির্দিষ্ট পরিমাপ অনুযায়ী স্টেরয়েড ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কথাও বলছেন তাঁরা। করোনা নিয়ে ‘ত্রাহি ত্রাহি’ রব রাজ্যবাসীর। তারই মাঝে ছত্রাকের বাড়বাড়ন্তে আতঙ্কিত প্রায় সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.