রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: বাড়ি থেকে উদ্ধার হল দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ৷ গলায় দড়ি দিয়ে তারা আত্মহত্যা করেছে বলেই দাবি পরিজনদের৷ ত্রিকোণ প্রেমের জেরে টানাপোড়েন নাকি সমকামী সম্পর্কে বাধা? পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুটের হুগলি গ্রামে দুই বান্ধবীর আত্মহত্যা ঘিরে নানা প্রশ্নের ভিড়৷
সোনালি কামিল্যা ও দিপালী মান্না নামে ওই দুই কিশোরী মাজিলাপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। শুক্রবার বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে তারা৷ অন্যান্য দিনের মতো খাওয়াদাওয়া সেরে সন্ধেবেলা একসঙ্গে পড়তে বসে তারা৷ এরপর ওই ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় দু’জনে৷ বেশ কিছুক্ষণ পর তাদের গোঙানির আওয়াজ পান পরিজনেরা৷ দৌড়ে যান ঘরের সামনে৷ অনেক ডাকাডাকিতেও দরজা খোলেনি ওই দুই ছাত্রী৷ বাধ্য হয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন পরিজনেরা৷ ঘরে ঢুকে চক্ষু চড়কগাছ তাঁদের৷ দেখেন গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে সোনালি এবং দিপালী৷ তড়িঘড়ি দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ তবে ততক্ষণে মারা গিয়েছে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা৷ জুনপুট কোস্টাল থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে৷ ঠিক কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিল ওই দুই ছাত্রী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানান জুনপুট কোস্টাল থানার ওসি সঞ্জীব দত্ত৷
দুই কন্যাসন্তানের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিজনেরা৷ তাঁদের দাবি, সোনালি এবং দিপালী দু’জনের সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল৷ দু’জনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়েছে বলে জানা নেই কারও৷ কেন এভাবে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে হল দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে তা বুঝতে পারছেন না কেউই৷ কারও দাবি, হয়তো ত্রিকোণ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল সোনালি-দিপালী, তাই এমন সিদ্ধান্ত নিল দু’জনে৷ আবার কেউ কেউ বলছেন সমকামী সম্পর্ক ছিল দুই ছাত্রীর৷ তবে গ্রামের দিকে এমন সম্পর্ক মানবেন না পরিজনেরা তা বুঝতে পেরে একসঙ্গে নিজেদের শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই কিশোরী৷ তবে ঠিক কী কারণে আত্মঘাতী হল ওই দুই কিশোরী, তা নিশ্চিত করে জানায়নি পুলিশ৷ পরিজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা না বলে এখনই ঘটনার কারণ খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় বলেই দাবি তদন্তকারীদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.