সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ৬ বছর পর মিলল সুবিচার। বলাগড়ে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় ফাঁসির নির্দেশ দিল চুঁচুড়া আদালত। ২০১৪ সালে টিউশন থেকে ফেরার পথে ধর্ষণ করা হয় ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে। সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে গত ২২ জানুয়ারির ধৃতদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সোমবার তাদের ফাঁসির সাজা শোনায় আদালত। রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনা করছে দোষীরা।
বলাগড়ের জিরাট থানার উত্তর গোপালপুরের বাসিন্দা ওই নাবালিকা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ৮টার সময় টিউশন থেকে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গৌরব মণ্ডল, কৌশিক মালিক এবং এক নাবালক তাকে জোর করে একটি জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। নাবালিকা চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এই মামলার বিশেষ আইনজীবী সুব্রত গুছাইত জানান, আসামীরা ঠান্ডা মাথায় মৃতদেহ জঙ্গলে রেখে একটি হোটেলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে।
ইতিমধ্যে নাবালিকার বাবা ও অন্যান্য প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রতিবেশী এক যুবক ওই নাবালিকার ফোনে বারবার ফোন করে। আসামীদের এক জন ফোন ধরে ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর খুনের সমস্ত প্রমাণ লোপাটের জন্য নাবালিকার দেহ ও তার সাইকেলটি একটি বাইকে চাপিয়ে নদীর চরে নিয়ে যায়। এমনকী ওই নাবালিকার দেহের সঙ্গে উদ্দাম যৌনতায় মেতে ওঠে ওই তিনজন। এরপর নাবালিকার দুই পা কোদাল দিয়ে কেটে গঙ্গার পাড়ে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেয়। ঘটনার পরের দিন ১৩ ডিসেম্বর নিজের মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য বলাগড় থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার বাবা।
তদন্তে নেমে বলাগড় থানার তদন্তকারী অফিসার এস আই সোমনাথ দে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। দোষী নাবালক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয়। অপরাধ স্বীকার করে নেয় সে। আপাতত জুভেনাইল কোর্টে বিচার চলছে তার। এই মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর গত সপ্তাহে চুঁচুড়া আদালতের অ্যাডিশন্যাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জাজ মানস রঞ্জন সান্যাল বাকি দুই আসামী গৌরব মণ্ডল ও কৌশিক মালিককে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৬৩, ৩৬৪এ, ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন। সোমবার ২ দোষীর ফাঁসির সাজার নির্দেশ দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.