ছবি: প্রতীকী
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বনগাঁর মতো ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পুরুলিয়াও কি গরু পাচারের সক্রিয় করিডর হয়ে উঠছে? বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা সংলগ্ন কোটশিলায় গরু পাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে এই চিন্তা মাথাচাড়া দিয়েছে জেলার পুলিশ কর্তাদের।
গত রবিবার সন্ধেবেলা কোটশিলা থানা এলাকার দঙ্গল মোড়ের নতুন বাঁধে দু’লরি ভর্তি কুড়িটি গরু আটক করে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরার শুরুর পরই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। জেলা পুলিশ সূত্রে আরও খবর, ধৃত দু’জনের নাম শেখ ইস্তেফার ও সিদ্দিক খান।তাদের বাড়ি ঝালদা থানার বাগানডি গ্রামে।তাদের কাছ থেকে কোনও বৈধ নথিপত্র পাওয়া যায়নি।পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, “সুনির্দিষ্ট মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
তবে এই দু’জনকে জেরা করে চক্রে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গিয়েছে। ফলে ওই লরির চালক-সহ মোট আটজনের নামে অভিযোগ হয়েছে। তদন্তকারীরা ধৃতদের জেরা করে আরও যে চারজনের নাম পেয়েছে, তারা ঝালদার বাগানডির বাসিন্দা শেখ ওয়াহাব ও হুসেনডির শেখ আসিরুদ্দিন। আটক হওয়া দুটি লরির মালিক এই দু’জনই বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এছাড়া এই চোরাই চক্রে হুসেনডির বাসিন্দা শেখ হাসমত ও বাগানডির শেখ সাবির রয়েছে বলে অভিযোগ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
গরু, মহিষ, ছাগল বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য যাওয়ার রেওয়াজ এই জেলায় রয়েছে। তাছাড়া জেলায় থাকা গরুর হাটগুলিতেও নানা বেনিয়ম হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু এভাবে একসঙ্গে দুই লরিবোঝাই করে কুড়িটি গরু পাচার হওয়ার ঘটনা এই জেলায় অতীতে চোখে পড়েনি। ফলে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হচ্ছে জেলা পুলিশ। জেলা জুড়ে নাকা চেকিং আরও জোরদার করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সংযোগকারী এই জেলার সব রাস্তায় রীতিমত তল্লাশি চলছে।
পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধি অনুযায়ী গরু, মহিষ বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘লাইভ স্টকস পারমিট’–এর প্রয়োজন হয়। কিন্তু ধৃতরা সেইসব নথিপত্র দেখাতে পারেনি। তাছাড়া ওই গরুগুলিকে যেভাবে স্বল্প জায়গার মধ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেটাও বিধি বহির্ভূত বলে পুলিশ জানিয়েছে। সবমিলিয়ে, এই গরুবোঝাই লরি বাজেয়াপ্ত হওয়ার ঘটনা মাথাব্যথা বাড়িয়েছে পুলিশের। অবাধ পাচারচক্র সক্রিয় হওয়ার আগেই তা অঙ্কুরে বিনাশ করতে চান তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.