শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: রোগীর সেবা করাই তাঁর পেশার ধর্ম। তাই করোনা আক্রান্ত জেনেও মহিলার সেবা করেছিলেন তাঁরা। সেই রোগীর কাছ থেকে ভাইরাস উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দুই নার্সের শরীরে বাসা বাঁধে। অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁর সংস্পর্শে আসা পরিবারের সদস্যদেরও শরীরে সংক্রমিত হয় করোনা। তারপর নিয়ম মেনে চিকিৎসা করান তাঁরা। জীবনযুদ্ধে জয়ীর হাসি হাসলেন প্রত্যেকে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় গায়ে ফুল ছিটিয়ে সসম্মানে করোনা যোদ্ধা নার্সদের বরণ করে নিলেন প্রতিবেশীরা। এমন অভ্যর্থনা মনে সাহস জোগাচ্ছে তাঁদের।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নার্স অঞ্জলি রাই। কালিম্পংয়ের করোনা আক্রান্ত মহিলার চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। তারপর থেকে তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট হাতে আসার পরই অবাক হয়ে যান সকলেই। দেখা যায় ওই নার্সের শরীরে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। সেই অনুযায়ী করোনা হাসপাতালে ভরতি হন তিনি। শুরু হয় চিকিৎসা। এদিকে, একে একে তাঁর সংস্পর্শে আসা নার্সের স্বামী, মা এবং ২২ মাসের সন্তানের শরীরেও ভাইরাস সংক্রমিত হয়। তাঁদেরও চিকিৎসা চলতে থাকে। দিনের পর দিন ধরে চলে যমে-মানুষে টানাটানি। অবশেষেই করোনাকে হারিয়ে জয়ের হাসি হাসেন প্রত্যেকে। করোনাকে পরাস্ত করে বুধবারই বাড়ি ফেরেন ওই নার্স। বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তারকার মতো আচরণ করা হয় তাঁর সঙ্গে। আবাসনের প্রত্যেক সদস্যরা তাঁদের করতালি দিয়ে অভিবাদন জানান। গায়ে ছেটানো হয় ফুলও। উষ্ণ অভ্যর্থনা দেখে আনন্দে প্রায় কেঁদে ফেলেন ওই করোনা জয়ী নার্স।
অঞ্জলি রাইয়ের মতো ঠিক একইভাবে কালিম্পংয়ের করোনা রোগীর সেবা করতে গিয়ে অসুস্থ হন নার্স প্রতীক্ষা প্রধান। তিনিও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই কাজ করেন। করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি। বুধবারই সুস্থ হয়ে কার্শিয়াংয়ের তিনধারিয়া ফেরেন ওই মহিলা। করোনা যোদ্ধা এই নার্সকে শুভেচ্ছা জানান তাঁর পরিচিতরা। করোনা যোদ্ধাদের সঙ্গে এমন আচরণ মন ছুঁয়েছে নার্সদের। উষ্ণ অভ্যর্থনাই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি জোগাবে বলেই দাবি সেরে ওঠা নার্সদের।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.