ধীমান রায়, কাটোয়া: সবে রবিবার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর বাসর ঘরে প্রায় সারারাত জাগা। সকালে স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি রওনা হওয়া। কিন্তু তার আগেই নবদম্পতির গাড়ি দাঁড়াল ভোটকেন্দ্রের সামনে। পরনে লাল বেনারসি, গলায় ফুলের মালা আর গা-ভরতি গয়না পরেই গাড়ি থেকে নামলেন নববধূ। তাঁকে সাহায্য করলেন বর। ভোটকেন্দ্রের আর পাঁচজনের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে এলেন। তারপর ফের গাড়িতে চড়ে রওনা দিলেন শ্বশুরবাড়ির পথে।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় সোমবার দেখা গেল এমনই ছবি। দুই নববধূ শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথেই প্রয়োগ করে যান তাদের ভোটাধিকার। কাটোয়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার চাঁপাপুকুর পাড়ের মেয়ে আশা সর্দার। রবিবার তার বিয়ে হয়। স্বামী সাহেব সর্দার পেশায় ব্যবসায়ী। কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে সাহেবের বাড়ি। সাহেববাবুর সঙ্গে তাঁর দুই আত্মীয় ছিলেন। সোমবার নবদম্পতির আর্শীবাদ অনুষ্ঠান সেরে বিদায় জানান আশার বাপের বাড়ির লোকজন। এরপর গাড়ি সটান দাঁড়ায় কাটোয়া কাশেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ে ১১৭ নম্বর বুথে। এই ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে ফের গাড়িতে উঠলেন আশা। সাহেব বলেন, ‘রবিবার রাতে বিয়ের পরেই আমাকে আশা বলেছিল যে ভোট দিয়ে আমাদের বাড়িতে উঠবে। আমি সামান্য এই অনুরোধ ফেরাই কি করে? তাছাড়া ভোটদান তো যে কোনও মানুষের সাংবিধানিক অধিকার।’
শুধু আশা সর্দারই নয়, কাটোয়ার গোয়ালপাড়ার মেয়ে মৌ পোদ্দারেরও বিয়ে হয়েছে রবিবার রাতে৷ সোমবার তিনি স্বামী অভিজিৎ দত্তের সঙ্গে গাড়ি চড়ে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে একইভাবে এদিন ভোট দিলেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে। কাটোয়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাটোয়া বালিকা বিদ্যালয়ে মৌয়ের ভোটদানের সময়ে স্বামী ভোটকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। মৌ বলেন, ‘এই নিয়ে আমি দ্বিতীয়বার ভোটাধিকার প্রয়োগ করলাম। ভোটের দিন ঘোষণার আগেই বিয়ের ঠিক হয়েছিল। তখন থেকেই ঠিক করেছিলাম শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথেই ভোটটা দিয়ে যাব।’ দুই নববধূর এই আগ্রহ দেখে উপস্থিত ভোটাররাও তাঁদের সাধুবাদ জানিয়েছেন।
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.