দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: এক নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে তিন যুবক। পরে তার মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিল তারা। ২০১৪ সালের হুগলির বলাগড়ে এই মর্মান্তিক ঘটনায় শিউড়ে উঠেছিল গোটা দেশ। বুধবার সেই মামলায় অভিযুক্ত দুজনকে অপরাধী সাব্যস্ত করে চুঁচুড়া আদালত। আরেক অভিযুক্ত নাবালক হওয়ায় জুভেনাইল কোর্টে তার বিচার চলছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বাড়ি বলাগড়ের জিরাট থানার উত্তর গোপালপুর। ২০১৪’র ১২ ডিসেম্বর রাত ৮টার সময় টিউশন থেকে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গৌরব মণ্ডল, কৌশিক মালিক ও আরেক নাবালক তাকে জোর করে একটি জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। নাবালিকা চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আসামীরা। এই মামলার বিশেষ আইনজীবী সুব্রত গুছাইত জানান, আসামীরা ঠান্ডা মাথায় মৃতদেহ জঙ্গলে রেখে একটি হোটেলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে। ইতিমধ্যে নাবালিকার বাবা ও অন্যান্য প্রতিবেশীরা খৌঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রতিবেশী এক যুবক ওই নাবালিকার ফোনে বারবার ফোন করলে আসামীদের এক জন ফোন ধরে ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর খুনের সমস্ত প্রমাণ লোপাটের জন্য নাবালিকার দেহ ও তার সাইকেলটি একটি বাইকে চাপিয়ে চরে নিয়ে যায়। এমনকী ওই নাবালিকার মৃতদেহের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে আসামীরা। এরপর নাবালিকার দুই পা কোদাল দিয়ে কেটে গঙ্গার পাড়ে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেয়। নাবালিকার বাবা পরের দিন ১৩ ডিসেম্বর নিজের মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য বলাগড় থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে।
তদন্তে নেমে বলাগড় থানার তদন্তকারী অফিসার এস আই সোমনাথ দে তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করে। তিন আসামীর মধ্যে একজন নাবালক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দীতে তার কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে নেয় বলে জানান সুব্রতবাবু। জুভেনাইল কোর্টে তার বিচার চলছে। এই মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর বুধবার চুঁচুড়া আদালতের অ্যাডিশন্যাল ডিস্ট্রিক্ট এ্যান্ড সেশন জাজ মানস রঞ্জন সান্যাল বাকি দুই আসামী গৌরব মণ্ডল ও কৌশিক মালিককে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৬৩, ৩৬৪এ, ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন। আগামী ২৭ জানুয়ারী আদালত এই কেসে আসামীদের সাজা ঘোষণা করবে। এদিকে নাবালিকার বাবা মেয়ের মৃত্যুর জন্য আসামীদের ফাঁসির দাবি করছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.