সম্যক খান, মেদিনীপুর: মণিপুরে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল গোটা দেশ। সেই পরিস্থিতিতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অপরাধে ফাঁসির সাজা শোনাল মেদিনীপুর আদালত। শুধু তাই নয়, দুই অপরাধীকে সাহায্য করেছিল এক মহিলা সঙ্গী। কীভাবে এক মহিলা তার মেয়ের বয়সী এক তরুণীর সর্বনাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে তা ভেবেই শিউরে উঠছেন সকলে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই রায়কে ঘিরে এদিন রীতিমতো চাঞ্চল্য দেখা গিয়েছে আদালত চত্বরে।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২১ সালের ৩ মে। পিংলা থানার জামনা গ্রামে জনৈক স্বপন জানার বাড়ি নির্মানের কাজ করতে এসেছিল ওই তিন নির্মান কর্মী। এদের মধ্যে বিকাশ বেলদার বাসিন্দা। ছোটুর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূমে। আর মহিলা শ্রমিক তপতীর বাড়ি তেমাথানীতে। মালিকের মেয়েকেই ধর্ষণ করে খুন করে তারা। খুনের পর সন্দেহের বশেই দুই রাজমিস্ত্রি ও তাদের সহযোগী এক মহিলা শ্রমিককে ঘটনার দিনই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সরকারী আইনজীবী দেবাশিস মাইতি বলেছেন, ওই মামলায় মঙ্গলবার মেদিনীপুরের দ্বিতীয় ট্রাক আদালতের বিচারক কুসুমিকা দে দুই রাজমিস্ত্রি বিকাশ মুর্মু ও ছোটু মুণ্ডাকে দুটি ধারায় পৃথকভাবে ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন। পাশাপাশি তাদের সহযোগী মহিলা শ্রমিক তপতী পাত্রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকারী আইনজীবি দেবাশিসবাবু বলেছেন, ওই মামলায় ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহন করা হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণ ও যাবতীয় নথিপত্র দেখার পর বিচারক ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। ফাঁসির আদেশে স্বস্তি পেলেও উচ্ছ্বাস নেই স্বপনবাবু ও তাঁর স্ত্রীর। এখনও ট্রমায় রয়েছেন। প্রতিরাতে দু’জনকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমতে হয়। এদিন সাজাঘোষণা কী হবে, তা জানতে আদালতে হাজির ছিলেন তাঁরাও। স্বপনবাবু বলেছেন, তাঁদের মেয়ে তো আর কখনও ফিরে আসবে না। তাঁর মায়ের আক্ষেপ, মেয়ের কত স্বপ্ন ছিল। এতদিনে এমএসসিতে ভরতি হয়ে যেত। ফুলের মতো নিষ্পাপ মেয়েটাকে ওরা শেষ করে ফেলল। ফাঁসির থেকেও আরও কঠিন শাস্তি তাদের প্রাপ্য ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.