বিক্রম রায়, কোচবিহার: জঙ্গল লাগোয়া লোকালয় মানেই হাতির (Elephant)অবাধ যাতায়াত। যখনতখন হস্তি দর্শন নতুন কিছু নয়। তবে কোচবিহারের তুফানগঞ্জবাসী সাধারণত লোকালয়ে ঢুকে পড়া হাতি দেখতে অভ্যস্ত নয়। তাই জল থইথই কোচবিহারের তুফানগঞ্জের রামপুর এলাকায় রাতের অন্ধকারে আচমকা জোড়া হাতির উপস্থিতি টের পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। আর রবিবার সাতসকালে উঠে তাদের সাক্ষাৎ পেয়ে বিস্মিতও তাঁরা। যদিও দলছুট দুটি হাতি তেমন ক্ষয়ক্ষতি করেনি বলেই জানান গ্রামবাসীরা।
লাগামছাড়া বৃষ্টিতে (Flood) এমনিতেই দিশেহারা অবস্থা উত্তরবঙ্গবাসীর। তার মধ্যে নয়া আতঙ্ক হাতির হানা। ১৮ জুন গভীর রাতে বানভাসি আলিপুরদুয়ার থেকে দলছুট হয়ে দুটি হাতি ঢুকে পড়ে কোচবিহারের (Cooch Behar) তুফানগঞ্জ এলাকায়। এর আগে কখনও এই এলাকায় হাতি দেখা যায়নি। তাই সচক্ষে প্রথমবার হাতি দেখার বিস্ময়ের সঙ্গে এলাকাবাসীর মনে মিশে ছিল ভয়ও। না জানি ফের কী তাণ্ডব শুরু করে! বর্ষণমুখর রাতে রামপুর, নাজিরান, দেউটি গ্রামে তখন ছুটে বেড়াচ্ছে জোড়া হাতি।
হাতি ঢুকেছে গ্রামে, সেই খবর পেয়ে রাতেই কোচবিহার ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিস থেকে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। নজরদারি শুরু হয় হাতি দুটির উপর। রাত কেটে সকাল হতেই গতিপথ পরিবর্তন করে দলছুট দুই দাঁতাল। কোচবিহার লাগোয়া আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি বাগানে ঢুকে পড়ে। বনকর্মীদের ধারণা, রাতে শিলবাংলো বালাপাড়া এলাকায় ছিল হাতি দুটি। এরপর দিনের আলো ফুটতে ফের পথ চিনে চলে গিয়েছেন মাঝেরডাবরিতে। রাতে কোচবিহার এলাকায় থাকলেও দুই গজরাজ তেমন কোনও ক্ষতি করেনি বলেই জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
কোচবিহারের বনকর্মীদের ধারণা, আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বক্সা প্রকল্পর ভলকা রেঞ্জ থেকে হাতি দুটি কোনওভাবে দলছুট হয়ে ঢুকে পড়েছিল কোচবিহারে। আর রাতের অন্ধকারে খানিকটা বিভ্রান্ত হয়ে গা ঢাকা দেয় বালাপাড়া এলাকায়। তাণ্ডবও দেখাতে পারেন সেভাবে। এরপর সকালে ফিরে যায় নিজেদের এলাকায়। বনকর্মীদের একাংশের মত, বন্যাবিধ্বস্ত আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন জঙ্গলও জলে থইথই। নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হচ্ছে প্রাণীদের। নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র যেতে হওয়ার কারণে তারা দিকভ্রান্ত হয়ে পথ ভুলেছে। এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.