সুনিপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: “খাও দাও বুঁদ হয়ে ডুবে যাও–দেখো চোখে, চোখে সরষে ফুল। করুক মাথা ঝিমঝিম…” মহানায়ক উত্তমকুমারের সুপারহিট ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবির গানের কলির যেন বাস্তবে দেখা গেল ঝাড়গ্রামের কেশররেখা গ্রামে।
[পাচারের ছক বদল, অনলাইনে বিক্রি হাতির দাঁত-সাপের বিষ]
হাঁড়িয়ার টানে গ্রামে এসে হাজির ‘জগাই-মাধাই’। আকণ্ঠ পান করায় সেদিন আর বাড়ি ফেরা হল না৷ মাতাল হয়ে সারা রাত গড়াগড়ি৷ তবে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই হল চৈতন্য। না না, এই চিত্র কোনও সিনেমার নয়! জঙ্গলের দুই দাঁতালের৷ শীতের রাতে গ্রামে ঢুকে নেশায় মাতাল হল গজরাজ৷ হাঁড়িয়া খেয়ে টলমল অবস্থা৷ অগত্যা, গ্রামেই রাত্রিবাস৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর ডিভিশনের কেশররেখা রেঞ্জের কেশররেখা গ্রামে শনিবার রাতে এই ভাবেই খাবারের খোঁজে গ্রামে ঢুকে হাঁড়িয়া খেলে ফেলল দলছুট দুটি দলমা হাতি৷ গজরাজের তাণ্ডবে ভাঙল গ্রামের একটি মাটির বাড়ি৷ হস্তি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, হাঁড়িয়া ও মহুয়ার গন্ধ হাতিকে আকৃষ্ট করে৷ তবে এরা যে নেশার ঝোঁকে গ্রামে কোনও ক্ষয়ক্ষতি করেনি এটাই রক্ষা৷ বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশা সীমান্তে গত কয়েক দিন ধরে দলমার প্রায় একশোটি হাতি রয়েছে৷ পড়শি রাজ্যের বনকর্মীদের বাধায় হাতিগুলি ফিরতে পারছে না৷ রবিবার রাতেও হাতির দলটি নয়াগ্রামের কেশররেখা জঙ্গল থেকে ওড়িশার দিকে ঢুকতে চেয়ে বাধা পেয়ে ফিরে আসে৷ ওই দলেই দুটি হাতি শনিবার রাতে গ্রামে ঢুকে নেশায় মেতে ছিল৷ হাতির দলটি রবিবার ভোরে কেশাররেখার দিক থেকে নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা জঙ্গলের দিকে চলে গিয়েছে৷ স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে হাতি দু’টিকে ড্রাম থেকে হাঁড়িয়া খেতে দেখা গিয়েছে৷ হাতি দুটি এতটাই মাতাল হয়ে গিয়েছিল যে তারা উঠতে পারছিল না৷ টলমল অবস্থায় বারবার বসে পড়ছিল৷ তবে ভোরের আলো ফোটার আগেই গ্রামবাসীরা দেখেন, জঙ্গলের দিকে রওনা দিয়েছে হাতি দুটি৷ কেশররেখার রেঞ্জার হরেন মাহাতো বলেন, শনিবার রাতে দলমার দলের দুটি হাতি গ্রামে ঢুকে নেশা করে। নেশা করার ফলে তারা গ্রামেই থেকে যায়৷ সকালে ফিরে যায় জঙ্গলে৷ তবে ওই গ্রামের একটি মাটির বাড়ি হাতিগুলি ভেঙে ফেলে।
[মাঝ সমুদ্রে জালে উঠল ধাতব যন্ত্রাংশ, চাঞ্চল্য দিঘায়]
খড়গপুর ডিভিশনের ডিএফও অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, গত কয়েক দিন ধরেই দলমার একশোটি হাতির পাল ওড়িশা সীমান্তের কাছে রয়েছে৷ হুলাপার্টি নামিয়েও হাতিগুলিকে সরানো যাচ্ছে না।
[চেনা মাইথনে এবার অনেক পরিবর্তন, বদল সবুজ দ্বীপেও]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.