অরূপ বসাক: বাড়ির আলমারি থেকে কিছু একটা জিনিস নিতে গিয়েছিল ১৩ বছরের তৃপ্তি প্রসাদ। বুঝতে পারেননি বিষধর লুকিয়ে রয়েছে তারই ঘরে। হাত বাড়িয়ে জিনিস নিতে যেতেই দংশন। তীব্র যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে তৃপ্তি। আঘাত দেখেই বাড়ির লোকজন বুঝে যান কী হয়েছে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে বিষ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। শরীর নিথর হয়ে গিয়েছে ডামডিমের স্কুল পড়ুয়ার। একইদিনে, সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে মেহবুব মিঞা(৪৫) নামে এক গ্রামীণ চিকিৎসকের। বাড়ি পাথর ঝোরার চা-বাগান এলাকায়। রাত আটটা নাগাদ বাড়ির বাথরুমে গিয়েছিলেন মেহবুব। তখনই মারণ দংশন। মালবাজার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি চিকিৎসককে।
[সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধাকে বেধড়ক মার ছেলে ও পুত্রবধূর]
দিনের পর দিন এভাবেই সাপের উপদ্রব বেড়ে চলেছে মালবাজার মহকুমায়। রাস্তাঘাটে বিপদের সম্ভাবনা তো সবসময়ই রয়েছে। বাড়িও নিরাপদ নয়। গ্রামের মানুষ এবং পরিবেশপ্রেমীরা জানান, সাপ ধরার জন্য বনদপ্তরের কোন টিমই নেই। নেই কোনও যন্ত্রপাতি। কোনও বাড়িতে সাপ ঢুকলে পরিবেশপ্রেমীদের উপর নির্ভর করে থাকেন বনদপ্তরের কর্মীরা। ডামডিমের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বাবুয়া প্রসাদ বলেন, যে মেয়েটির সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়, সেখানে বনদপ্তরকে রাতে ফোন করেও কোন লাভ হয়নি। কারণ বনদপ্তরের সাপ ধরার কোনও ব্যবস্থাই নেই। তাই সাপটি ঘরের ভিতরে কোন গর্ত দিয়ে ঢুকে পড়েছে, তা জানাই সম্ভব হয়নি। এলাকার মানুষের দাবি, অবিলম্বে সাপ ধরার সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে একটি টিম তৈরি করুক বনদপ্তর। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় সাপ নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক শিবির করা উচিত।
[কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারের ২ শিশুর রহস্যমৃত্যু, চাঞ্চল্য কোচবিহারে]
ওদলাবাড়ি পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসের সম্পাদক নফসর আলির বক্তব্য, ‘এর আগে বহুবার বনদপ্তরের আধিকারিকদের সাপ ধরার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি দপ্তর। এর আগে যেসব জায়গায় সাপ বেরিয়েছিল, তা আমরা উদ্ধার করি। তাই বনদপ্তরের উচিত এখনই সাপ ধরার যন্ত্রপাতি কিনে একটি টিম তৈরি করা।’ জবাবে মালবাজারের বনদপ্তরের রেঞ্জার সমীর সিকদার বলেন, ‘আমাদের সাপ ধরার কোনও অনুমতি নেই। তাছাড়া সাপ ধরতে বিভিন্ন জিনিসের দরকার, সেই সবেরও অভাব রয়েছে।’
[জায়ের সঙ্গে ঝামেলায় ছেলেকে খুন, মৃত সন্তান কোলে থানায় আত্মসমর্পণ গৃহবধূর]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.