Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিমল

বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার বিমল গুরুংয়ের দুই সহযোগী

জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে ওকালতনামা জমা দিতে আসছিলেন গুরুংরা।

Two Close Associates of Bimal Gurung Detained from Bagdogra.
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:April 4, 2019 5:58 pm
  • Updated:May 21, 2020 8:32 am  

শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: এল কি এল না। সকাল থেকেই এই প্রশ্ন পাক খাচ্ছিল পাহাড়ে। সেই সঙ্গেই দার্জিলিং থেকে সমতল, সর্বত্রই গড়িয়ে নামছিল দ্রুত গতির তিস্তার মতো অশান্তির আশঙ্কা। ফেরার গুরুং কি আদৌ ফিরছেন? এই জল্পনাকে কেন্দ্র করেই সকাল উত্তেজনা বাড়ছিল পাহাড়ে। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশকে হাতিয়ার করে পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের ফেরার খবর বুধবার বিকেলে জানিয়েছিলেন তাঁর মুখপাত্র।

আরও জানা গিয়েছিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মেনে জলপাইগুড়ি হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চে মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে ওকালতনামা জমা দেবেন গুরুং। তাই তাঁর সঙ্গে দিল্লি থেকে রোশন থাপা, অমল থাপা, মিমা থাপা, সঞ্জিত সুবেদি, যোগেন্দ্র প্রধান ও বিদ্রোমান গোলে-সহ মোট নজন বাগ়ডোগরা আসবেন। এমনকী এর জন্য ১২টা ১০ মিনিটের ইন্ডিগো ও ১.৪৫ মিনিটের এয়ার এশিয়ার বিমানে টিকিটও কাটা হয়েছিল। যদিও শেষপর্যন্ত গুরুংদের দুই সঙ্গী যোগেন্দ্র প্রধান ও রোহন রাই-এর হাত দিয়ে ওকালতনামা পাঠান গুরুং। কিন্তু, বাগডোগরা বিমানবন্দরে প্লেন থেকে নামতেই তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুরো বিষয়টির নেতৃত্বে ছিলেন দার্জিলিং রেঞ্জের মনোজ ভার্মা, পুলিশ সুপার অমর নাথকে ও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিএসপি তরুণ হালদার-সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকরা।

Advertisement

সম্প্রতি ভোট প্রচারে নামতে চেয়ে বিমল গুরুংরা তিন সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন করেছিলেন। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট তা গ্রহণ করলেও নিষ্পত্তির ভার কলকাতা হাই কোর্টের উপরেই তুলে দেয়। চারদিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দেয়। সেই মামলা ওঠার কথা জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয় পাহাড়। টানা বনধ, বিক্ষোভ, মিছিল, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, সরকারি ভবন ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তেতে ওঠে পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। পরে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাওয়ায় গা ঢাকা দেন তখনকার মোর্চা সুপ্রিমো গুরুং ও রোশন। ওই বছরেরই ১৩ অক্টোবর বিমলকে ধরতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রাজ্য পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা অমিতাভ মালিক। এরপরই লুক আউট নোটিস জারি হয় বিমলের বিরুদ্ধে। তখন থেকেই ফেরার তিনি।

[আরও পড়ুন-‘প্রচারের জন্য নিজের নামেই ছবি বানিয়েছেন’, মোদির বায়োপিক নিয়ে তীব্র কটাক্ষ মমতার]

২০১৭ সালের ৮ জুন দার্জিলিংয়ের ভানু ভবনে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালীন হিংসা ছড়াতে শুরু করে। মুখ্যমন্ত্রী-সহ গোটা মন্ত্রিসভা উপস্থিত ছিল। পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যে দাবিতে হিংসা ছড়ায়। গুরুংয়ের গুন্ডাবাহিনী পুলিশকর্মীদের আক্রমণ করে। পাহাড়ে হিংসাত্মক আন্দোলনের দুই পুরোধার নামে একাধিক মামলা রুজু হয়। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হওয়ার পর গা-ঢাকা দেন গুরুং। এরপর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে চেয়ে পাহাড়ে ফেরার আবেদন করেন বিমল ও রোশন। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়ে তাঁরা হতাশ হন। সুপ্রিম কোর্ট জানায় বিমল গুরুং ও রোশন গিরিকে পাহাড়ে লোকসভা নির্বাচনের সময় ফেরার জন্য কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানাতে হবে। সাত এপ্রিলের মধ্যে এই মামলার শুনানি শেষ করতে হবে। তবে মামলার শুনানি চলাকালীন বিমল ও রোশনকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

[আরও পড়ুন-‘সিপিএমকে আক্রমণ করব না’, ওয়ানড় থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বললেন রাহুল ]

শীর্ষ আদালত থেকে রক্ষাকবচ পেয়েই বিমল ও রোশন পাহাড়ে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে বিমলপন্থী মোর্চা সমর্থকরা ভিড় করেন বাগডোগরা বিমানবন্দরে। তাঁদের পাশাপাশি কালো পতাকা নিয়ে হাজির ছিলেন বিনয়পন্থী মোর্চা সমর্থকরাও। তাঁদের অভিযোগ, শান্ত পাহাড়কে ফের অশান্ত করতেই পাহাড় আসার চেষ্টা করেছেন বিমল।

[আরও পড়ুন-নির্বাচনী লড়াইয়ে অস্তিত্বহীন ‘বন্ধু’, সহপাঠীকে চিনতে অস্বীকার আভাস রায়চৌধুরির]

রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেব বলেন, “পাহাড়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করার পিছনে বিমল গুরুং ও রোশন গিরির হাত ছিল। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ও অস্ত্র মামলার ধারায় নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ আইন মোতাবেক কাজ করেছে। এরপর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী যা হওয়ার হবে।” অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরি বারাসত আদালত চত্বরে দাবি করেন, “বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে অন্যায় করেছে রাজ্য সরকার। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement