শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: প্রয়াত দাদুর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান শেষে স্নান করতে নেমে মর্মান্তিক পরিণতি ভাই-বোনের। ভরা বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা নদীতে নেমে আচমকা জলের গভীরে তলিয়ে গেল দুই নাবালক নাতি-নাতনি। তবে মুষলধারা বৃষ্টির মাঝে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জলে ফুলে উঠা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বাকি তিন শিশুকে কোনওক্রমে উদ্ধার করেন এক যুবক। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের (Islampur) মাটিকুণ্ডা ২ পঞ্চায়েতের কনিভিটা এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কনিভিটা গ্রামের বাড়িতে উপেন দাসের বাবা প্রয়াত ধীরেন দাসের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। ধর্মীয় আচার রীতি মেনে বাড়িতে মৃত বাবার পারলৌকিক কাজ সম্পন্ন করে পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে স্নানের উদ্দেশে বাড়ির অদূরে দোলাঞ্চা নদীতে পৌঁছন। জলে পরিপূর্ণ দোলাঞ্চা নদীতে স্নান (Bath) করার সময় বাড়ি কয়েকজন শিশু সদস্য নদীতে নেমেছিল। তার পর দীর্ঘক্ষণ তাদের দিকে নজর দেয়নি কেউ। আচমকা জলে তলিয়ে যেতে যেতে চিৎকার করতে শোনা যায় তাদের। তখন প্রায় ২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে।
তাদের চিৎকার শুনে নদীর (River) ঝাঁপিয়ে পড়ে তিন শিশুকে কোনওক্রমে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার সম্ভব হলেও বাকি দুই বালক-বালিকার নিথর দেহ পাওয়া যায়। অসুস্থ তিন শিশুকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হলে বাকি দুই নাতি-নাতনির নিস্পন্দ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় হাসপাতালে। কীভাবে মৃত্যু হল তাদের, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান ইসলামপুর থানার আইসি হীরক বিশ্বাস। মৃত শুভ দাসের বয়স ১২ বছর, বোন তুলি দাস ১১ বছরের। তাদের বাবা-মা কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজে নিযুক্ত।
মৃত শিশুদের মাসি সন্ধ্যা দাস বলেন, “বাবার শ্রাদ্ধশান্তির কাজ বাড়িতে সম্পূর্ণ হয় আজ। তার পর দুপুরে পরিবারের সকলে নদীঘাটে তিন স্নান করতে গিয়েছিলাম। আমাদের স্নানের সময় পাঁচ শিশুও জলে নেমে দীর্ঘক্ষণ নিখোঁজ ছিল। তার পর হঠাৎ জলে ভাসতে দেখা যায় তিনজনকে। বাকি দুজনকে বাঁচানো যায়নি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.