সাবিরুজ্জামান, লালবাগ: জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়। পুলিশের জালে সৌভিক বণিক ও মৃত বন্ধুপ্রকাশ পালের বাবা অমর পাল। আপাতত জিয়াগঞ্জ থানায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সৌভিক ও অমর পালের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই খুনের রহস্যের কিনারা হবে বলে মনে করছে তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে,এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহযোগিতা করেছে সিআইডি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিআইডি আধিকারিক ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।
মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের কানাইগঞ্জ লেবুবাগানের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল। স্ত্রী বিউটি ও ছ’বছরের ছেলের সঙ্গে থাকতেন তিনি। দশমীর দুপুরে ওই ঘর থেকেই তিনজনের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। খুনের ঘটনায় তদন্তে নামে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। তদন্তে খুনের পিছনে আর্থিক লেনদেন, পারিবারিক কলহ বা সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকতে পারে বলে মনে করেন তদন্তকারীরা। এরপরই জেরায় উঠে আসে সৌভিক বণিক নামে মৃত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের এক বন্ধুর নাম। মৃত বিউটি পালের মা জানান, চড়া সুদে ধার করে অন্তত ৭-৮ লক্ষ টাকা সৌভিককে দিয়েছিলেন তাঁর জামাই। তবে টাকা ফেরত দিতে চাইত না সৌভিক। টাকা ফেরতের কথা বললে প্রাণনাশের হুমকিও দিত সে। তাই তাঁর অনুমান, আর্থিক বিবাদের জেরে সপরিবারে খুন হতে হয়েছে তাঁর জামাইকে।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে সৌভিকের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। কিন্তু বন্ধুপ্রকাশ পালের পরিবারের সদস্যদের আচরণে সন্দেহ বাড়তে থাকে। জানা গিয়েছে, ছোট বেলায় ওই শিক্ষকের বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। সেই থেকে মায়ের সঙ্গে সাগরদিঘিতে থাকতে শুরু করেন বন্ধুপ্রকাশ। বাবা অমরপাল থাকতেন রামপুরহাটে। কিন্তু ছেলে বড় হতেই, বাবা-ছেলের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। সেই অশান্তি আদালত পর্যন্তও গড়ায়। ফলে সেই সম্পত্তিগত বিবাদের জেরেও শিক্ষকের পরিবার খুন হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করে পুলিশ। এই সন্দেহের বশেই আটক করা হয়েছে অমরপালকে। তবে বন্ধু নাকি বাবা? এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পিছনে কার হাত রয়েছে দ্রুতই তা স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তদন্তের স্বার্থে ইতিমধ্যেই জিয়াগঞ্জে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, গোয়েন্দা আধিকারিক ও পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.