চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: ট্রলি ব্যাগে ভরে খুদেকে কিডন্যাপ। মুক্তিপণের টাকা না মিললে খুনের হুমকির অভিযোগ গৃহ শিক্ষিকের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্য়াপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নন্দীগ্রামের ১ নম্বর ব্লকের শিমুলকুণ্ড গ্রামে। ইতিমধ্যেই শিশুটির শিক্ষিক-সহ পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন বিজেপি নেত্রী।
জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রামের তেখালি বেকারি থেকে রুটি-বিস্কুট নিয়ে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করেন শিশুটির বাবা গোপাল বাঁশি। স্ত্রী তেখালি বাজারের কাছাকাছি চায়ের দোকান চালান। নয় বছরের মেয়ে, সাড়ে ছয় বছরের ছেলেকে বাড়িতে রেখেই দু’জন প্রতিদিন ভোরে কাজে বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় ছেলে-মেয়ের জানা জায়গাতেই চাবি রেখে গিয়েছিলেন শুক্রবারও। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই দুষ্কৃতীরা তালা খুলে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। প্রথমে শিশুকন্যাকে বেঁধে ফেলে তারা। সেই সময় ছোট্ট ছোট্ট তীর্থ ঘুমোচ্ছে। সোনা, নগদের জন্য বাড়ি লণ্ডভণ্ড করে ফেলে তারা। কিছু না পেয়ে ঘুমন্ত শিশুটিকে ট্রলিতে ভরে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। এর কিছুক্ষণ পর ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে শিশুটির মায়ের কাছে ফোন যায়। তখনই জানা যায়, শিশুটিকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। বিষয়টা জানাজানি হতেই তেখালি ফাঁড়ি এবং নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ হাজির হয় ঘটনাস্থলে। ফলে শিশুটিকে ব্যাগে ভরলেও বেশি দূর এগোতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বিরুলিয়া এলাকার শ্মশানে ফেলে গা ঢাকা দেয় তারা। বিরুলিয়া এলাকার মানুষজন ফাঁকা শ্মশানে সাতসকালে শিশুটিকে দেখে অবাক হয়ে যান। খুদেকে জিজ্ঞেস করতেই সে বিষয়টা জানায়। সেই মতো খবর যায় তেখালি ফাঁড়ি এবং নন্দীগ্রাম থানায়। ততক্ষণে পুলিশের আরেকটি দল সমস্ত জায়গায় নজরদারি শুরু করে দিয়েছে।
শিশুকে উদ্ধারের পরই পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতরা হল বিজয় মণ্ডল, শ্রেয়া মণ্ডল, সুমিত্রা মণ্ডল, সৌম্যদীপ সাহু এবং সুস্মিতা সিং। জানা যাচ্ছে, টাকা হাতাতেই এই ছক কষে ধৃতরা। শিশুটির বাবা গোপাল বাঁশি বলেন, “আমার স্ত্রীর ফিক্সড ডিপোজিটের ৬০ হাজার টাকা ম্যাচিওর হয়েছে। বিজয়রা সেটা জানতেন। এমনিতেও ওরা ভাবত আমার কাছে অনেক সোনা আছে। বেশ কিছু টাকা পয়সা এবং সোনাদানা আমার বাড়িতে রয়েছে ওরা মনে করতেন। আমরা কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর বাড়িতে ঢুকে সেই টাকা হাতানোর ছক কষে। টাকা না পেয়ে আমার ছোট্ট তীর্থকে ওরা ব্যাগে ভরে নিয়ে পালিয়ে যায়।” ঘটনা প্রসঙ্গে হলদিয়ার এসডিপিও অরিন্দম অধিকারী বলেন,”নন্দীগ্রামে শিশু অপহরণের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.