ঘটনায় হতবাক ওই ব্যক্তি। নিজস্ব চিত্র
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: দিব্যি সুস্থ শরীরে জীবিত আছেন প্রৌঢ়। কিন্তু কাগজে তাঁকে মৃত বানিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৪০ বছর আগেই। শুধু মৃতই নয়, সেই কাগজ পঞ্চায়েত অফিসে জমা করে জমি হাতানোর চেষ্টাও হয়েছে বলে অভিযোগ। গোটা বিষয়টি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনাটি বনগাঁর পেট্রাপোল থানার ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে নরহরিপুর এলাকার বাসিন্দ শঙ্কর বিশ্বাস। তাঁর ৩০ শতক জমি রয়েছে জয়ন্তপুর এলাকায়। সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন, ওই জমির কিছু অংশ হাতিয়ে নেওয়া চেষ্টা চলছে। কানাই সরকার নামে এলাকারই এক বাসিন্দা নিজের নামে ওই জমির জাল দলিল ও রেকর্ড বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন। তৎক্ষণাৎ শঙ্কর বিশ্বাস বিএলআরও অফিসে যোগাযোগ করেন।
আর সেখানে গিয়ে তিনি আরও হতবাক হন। তিনি জানতে পারেন, ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তাঁর জমির ওয়ারিশন সার্টিফিকেট তোলা হয়েছে। সেখানে কাগজেকলমে ওই ব্যক্তিকে মৃত হিসেবে দেখানো হয়েছে। তাও সেই কাগজে মৃত্যু ইদানীং নয়। প্রায় চার দশক আগে তিনি মারা গিয়েছেন বলে কাগজে দেখানো হয়েছে। কেবল তাইই নয়, অন্য কয়েকজনের নামে সেই সম্পত্তির ওয়ারিশন তৈরি হয়েছে। এরপরে তিনি ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শঙ্করবাবু ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। একসময় ওই জমির মালিক ছিলেন তাঁর বাবা। ২০১৬ সালে ওই জমি দানপত্র করে দেওয়া হয়েছিল শঙ্করবাবুকে। এদিন শঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “আমাকে ১৯৮৫ সালে মৃত দেখানো হয়েছে। জাল ওয়ারিশন বের করে আমার জমি রেকর্ড করতে দেয়। এভাবে জমি আত্মসাধের বড়চক্র রয়েছে অফিসগুলিতে। প্রশাসনের গোটা বিষয়টি দেখা উচিত।”
বিষয়টি ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষের কাছে অভিযোগ আকারে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “শঙ্কর বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি একটি অভিযোগ জানান। দেখা গিয়েছে জমা হওয়া ওই ওয়ারিশন আসলে জাল। পঞ্চায়েতের মেমো নম্বরের সঙ্গে সেটির কোনও মিল নেই।” এই বিষয়ে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। একটি বড় চক্র জাল নথি বানানোর কাজে সক্রিয় আছে বলে অনুমান। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.