স্টাফ রিপোর্টার: পূ্র্বঘোষণা অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের ট্রাক ধর্মঘট। প্রায় ছ’লক্ষ ট্রাক রাস্তায় নামেনি। ফলে পণ্য সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ। মাছ-ডিম-সবজি সবই অমিল।যার জেরে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ার আশঙ্কা। পরিস্থিতি না বদলালে পকেটে টান পড়তে পারে মধ্যবিত্তের। ধর্মঘট চলতে থাকলে ভিনরাজ্য থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রেও চরম সমস্যা শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এই ধর্মঘটে শুধু বড় ট্রাকই নয়, ছোট ও মাঝারি ট্রাকও শামিল বলে মালিকদের সংগঠন ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে।
রবিবার রাত থেকে জাতীয় সড়কের রাস্তার দুই ধারে সার দিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। কোনওভাবেই এদিন গাড়ি নামাতে চাননি তাঁরা। সরকার তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে বলে জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফে। পুলিশি জুলুম, ওভারলোডিং বন্ধ, থার্ড পার্টি ইনসিওরেন্সের প্রিমিয়াম বৃদ্ধির প্রতিবাদ সহ ছ’দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ট্রাক মালিকরা। তাঁদের আরও দাবি, কেন্দ্রের তরফে পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে যে সেফ অ্যাক্সেল ওয়েটের পুনর্বিন্যাসের কথা বলা হয়েছে, রাজ্যকে তাও দ্রুত কার্যকর করতে হবে। ট্রাক মালিকরা জানিয়ে দেন, এই ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে। এদিন প্রায় সাড়ে পাঁচ থেকে ছ’লক্ষ ট্রাক রাস্তায় নামেনি। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারকে তাঁরা বারবার চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই এই ধর্মঘটে নেমেছেন তাঁরা।
এদিকে, ধর্মঘটের জেরে মাছ থেকে কাঁচা সবজি ট্রাকে করেই রোজ সকালেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাজারে পৌঁছে যায়। আজ সকালে অনেক বাজারেই মাল আসেনি। ছোট ট্রাকে করে পোস্তা বাজার, কোলে মার্কেটে সবজি, হাওড়া ফিশ মার্কেটে মাছ ঢুকলেও কাল থেকে তাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই জিনিসপত্রের দাম বাড়বে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বসিরহাট, দেগঙ্গা, ক্যানিং-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচা সবজি, অন্ধ্রপ্রদেশের মাছ, হায়দরাবাদ থেকে ডিম আসে। ফলে ট্রাক ধর্মঘটে সমস্ত খাদ্যপণ্যের আমদানির ক্ষেত্রেই প্রভাব পড়তে পারে। তৈরি হবে সংকট। আর তাতেই বাজারে গিয়ে মধ্যবিত্তের পকেট ফাঁকা হওয়ার আশঙ্কা।
সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সজল ঘোষ বলেন,“দাবিদাওয়া আমরা জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই এই ধর্মঘট। এখনও পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি।” ট্রাক ধর্মঘটের প্রভাবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সীমান্ত বাণিজ্যও। পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে কয়েকশো পণ্যবোঝাই ট্রাক। যদিও বনগাঁর এআরটিও বিপ্লব প্রধান ট্রাক মালিকদের কাছে অনুরোধ করেন, বাংলাদেশি ট্রাকগুলিকে ছেড়ে দিতে। সেই অনুরোধ মেনে বেলা গড়াতেই পেট্রাপোল সীমান্তে চালু হয়ে যায় পণ্য পরিবহণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.