সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পের সার্থকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল দলেরই এক সক্রিয় কর্মীর ‘বেআইনি’ কাজ। নিজের প্রথম পক্ষের নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়ে বিতর্কে দুর্গাপুরের (Durgapur) কাঁকসার এক সক্রিয় তৃণমূল নেত্রী। বিয়ের ছবি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই দিয়েছেন মহিলা। গোটা ঘটনায় দলের রোষে ওই নেত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কন্যা সন্তানকে স্বনির্ভর করার চেষ্টায় একাধিক প্রকল্প চালু করেছেন। যা বিশ্ব জুড়ে প্রশংসিত। আর তাঁর দলেরই নেত্রী বিয়ে দিলেন নাবালিকা মেয়ের। দুর্গাপুরের কাঁকসা থানার ডাকবাংলার মাটিপাড়ার বাসিন্দা পূর্ণিমা হালদার। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার পূর্ণিমা হালদার তাঁর প্রথম পক্ষের নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে বাইরে কোথাও গিয়েছিলেন। শনিবার ফিরে আসতেই বাঁধে বিপত্তি। পাড়ার লোকজনের দাবি, ওই নেত্রী মেয়ের বিয়ের ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেন। আলোড়ন পরে যায় এলাকায়। স্থানীয়রা খবর দেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে। অভিযোগ পেয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশা কর্মীদের মাটিপাড়ার পূর্ণিমা হালদারের বাড়িতে খোঁজ খবর করতে পাঠান। শাসকদলের ওই নেত্রী তখন আশা কর্মীদের জানান, বিকেলের মধ্যে মেয়েকে নিয়ে আসবেন।
শনিবার বিকেলের পর থেকেই অবস্থা বেগতিক বুঝে গোটা পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ। নাবালিকা মেয়েকে বিয়ের নাম করে অর্থের বিনিময়ে পাচার করে দেয়নি তো? এই প্রশ্নও তুলছেন কাঁকসার মাটিপাড়ার বাসিন্দারা। অবিলম্বে কাঁকসার বিডিওকে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার আরজি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। নাবালিকাকে ঘরে ফিরিয়ে আনুক প্রশাসন, দাবি এলাকাবাসীর। গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গাপুরের কাঁকসা থানার ডাকবাংলোর অন্তর্গত মাটিপাড়া এলাকায়। অভিযোগ সর্ম্পকে কাঁকসার বিডিও পর্ণা দে জানান, “অভিযোগ পেয়েই আমি তদন্ত শুরু করি। পুলিশকেও তদন্ত করতে বলি। কিন্তু মেয়েটি কোথায়? বাড়ির লোক নেই। তালা বন্ধ। ওনারা মনে হয় জেলায় নেই। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তদন্ত এখনও চলছে।”
এই বিষয়ে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের কাঁকসা ব্লকের সভাপতি দেবযানী মিত্র জানান,”যদি এই রকম হয়ে থাকে তো অপরাধ হয়েছে। বাল্য বিবাহ রোধ করতেই কন্যাশ্রী প্রকল্প। এটা যদি উনি করে থাকেন তবে দল ব্যবস্থা নেবে ও প্রশাসন আইনগত পদক্ষেপ নেবে।” তৃণমূলের কাঁকসা ব্লকের সভাপতি ভবানী প্রসাদ ভট্টাচার্য জানান, “এখন সবাই তৃণমূল করি বলে। ওই মহিলা দলে নেই। যেই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক অন্যায় করেছেন। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.