সৌরভ মাজি ও রিন্টু ব্রহ্ম: সিপিএম-বিজেপি ভোট প্রচারে এলেই মহিলাদের ঝাঁটা হাতে তাড়া করার নিদান দিলেন তৃণমূলের আদিবাসী সংগঠনের নেতা। বিতর্ক তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলে। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন আদিবাসী মহল্লায় গিয়ে বৈঠক করছেন তৃণমূলের আদিবাসী সেলের রাজ্য সভাপতি দেবু টুডু। আর সেই সব বৈঠকে তিনি বলছেন, “বামফ্রন্ট আদিবাসীদের উন্নয়ন করেনি। আদিবাসীদের প্রলোভন দেখিয়ে শুধুই ভোট নিয়েছে। আর বিজেপি আদিবাসীদের জঙ্গলের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তাই তারা ভোট চাইতে এলে মহিলারা ঝাঁটা হাতে তাড়া করবেন।”
লোকসভা ভোটের মুখে এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপির বর্ধমানের যুব মোর্চার সভাপতি শ্যামল রায় বলেন, “তৃণমূল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তাই এইসব মন্তব্য করছে দলের নেতারা। মানুষ কাদের ঝাঁটা হাতে তাড়াবে, তা নির্বাচনের ফল বেরনোর পরই বোঝা যাবে।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরী বলেন, “তৃণমূল মানুষের গণতন্ত্র হরণ করে। তাই তাঁদের কাছ থেকে এর থেকে ভাল কিছু আশা করা যায় না।” কংগ্রেসের জেলার কার্যকরী সভাপতি কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “রাজনীতিতে মতভেদ থাকতেই পারে। সব নেতারই উচিত শিষ্টাচার মেনে মন্তব্য করা।”
তৃণমূলের আদিবাসী সেলের রাজ্য সভাপতি দেবু টুডু পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতিও। ওই মন্তব্য নিয়ে অবশ্য তিনি সাফাই দিচ্ছেন। তাঁর যুক্তি, আদিবাসীদের উন্নয়নে বামফ্রন্ট কিছুই করেনি। তিনি বলেন, “বাম জমানায় আদিবাসীদের কথা বলার অধিকারটাই কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তৃণমূল সরকার সেই অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। পঞ্চায়েতে গিয়ে একজন আদিবাসী উন্নয়ন প্রকল্পে তাঁদের প্রাপ্য আদায় করে নিতে পারেন। শুধু তাই নয় পঞ্চায়েত আদিবাসীদের দুয়ারে গিয়ে বৈঠক করে অভাব-অভিযোগ শুনে উন্নয়ন করেছে।” দেবু টুডু আরও জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের ২ টাকায় চাল দিচ্ছেন, জমির পাট্টা দিচ্ছেন, ঘর দিচ্ছেন, জাহের থানের পাট্টা দিয়েছেন। সাঁওতালি ভাষায় পঠনপাঠন শুরু করেছেন প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত।
তিনি বলেন, “সিপিএম প্রতারণা করেছে আমাদের আদিবাসী সমাজের সঙ্গে। বিজেপি জঙ্গলের অধিকার কাড়ছে। তাহলে মানুষ ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করবে না তো কী করবে ওদের।” গত বোর্ডে জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকাকালীন দেবু টুডু আদিবাসী মহল্লায় নিশিযাপন কর্মসূচি শুরু করেন। আদিবাসীদের সঙ্গে তাঁদের ভাষায় কথা বলে সমস্যার কথা শুনতেন তিনি। সমাধানও করতেন। সঙ্গে সরকারি আধিকারিকরাও থাকতেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.