সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ট্রেন্ড শুরু হয়ে গিয়েছিল ২০১৪ সালেই। রাজ্যে ঢিমেতালে হলেও বাড়ছিল বিজেপির ভোট। প্রবল মোদি হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে গেরুয়া শিবির ভোট পয়ে গিয়েছিল ১৬ শতাংশের কাছাকাছি। এমনকী গত লোকসভায় রাজ্যে ২টি আসনও জেতে বিজেপি। বামেদের ভোটব্যাংকের কিছু অংশ সরে গিয়েছিল বিজেপির দিকে। ২০১৬ বিধানসভা ভোটে বামেরা সেই ভোটারদের কিছু অংশকে ফিরিয়ে আনতে পারলেও সাফল্য পায়নি। সেবারের পরাজয় আরও আঘাত করেছে আলিমুদ্দিনকে। তৃণমূল বিরোধিতায় অন্ধ বাম সমর্থকরা, নিজেদের নেতাদের উপর ভরসা হারিয়ে এখন মমতাকে সরানোর জন্য কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার পন্থা নিচ্ছেন। অর্থাৎ, তৃণমূলকে রুখতে বিজেপির দ্বারস্থ হচ্ছেন আদ্যন্ত বামপন্থীরাও। যা রীতিমতো চিন্তায় রাখছে রাজ্যের শাসকদলকে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বামেরা। বিজেপি পেয়েছিল ১৬ শতাংশের কিছু বেশি। ২০১৬ বিধানসভার পর বামেদের ভাঙন প্রবল হয়, দ্রুতহারে বাড়তে থাকে বিজেপি। দক্ষিণবঙ্গে নিজেদের যেটুকু জমি ছিল তাও কালক্রমে হারিয়ে ফেলেছে কংগ্রেস। আর এই সব তৃণমূল বিরোধী ভোট জমা হচ্ছে গেরুয়া ঝুলিতে। সেই সঙ্গে রয়েছে ধর্মীয় মেরুকরণের অস্ত্রও। এই জোড়া ফলার সুবাদেই রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। তৃণমূল শিবির সূত্রে খবর, দলের অন্দরের খবর অনুযায়ী সংখ্যালঘু সংখ্যা কম এমন ১৫টি আসনে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্যের শাসকদলকে।
এমনিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের লোকসভায় বিয়াল্লিশে ৪২ স্লোগান দিয়েছেন। কিন্তু লড়াইটা যে কঠিন, তা হয়তো তিনিও টের পাচ্ছেন। তাঁর দলের নেতারাও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে জানিয়েছেন, “আমাদের ভাগ্য এখন অনেকটা নির্ভর করছে বামেদের ভোটের উপর। আমরা তিরিশটির বেশি আসন জেতার ব্যপারে আশাবাদী। তবে, যদি বামেদের দশ শতাংশ ভোটও বিজেপিতে যায় তাহলে সংখ্যাটা ২৫-ও হয়ে যেতে পারে।” যদিও, প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলছেন, “আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আগের বছরের থেকে বেশি আসন পাব। বিদ্যাসাগর কলেজে যা ঘটেছে তার পরে বিজেপি আর এ রাজ্যে দাগ কাটতে পারবে না।” সিপিএম নেতাদের একাংশ অবশ্য, বাম-বিজেপি আঁতাতের এই অভিযোগ নাকচ করে দিচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.