সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠারেঠোরে চাপানউতোর চলছিল। তবে এবার আর কোনও আকার ইঙ্গিত নেই। একেবারে সম্মুখ সমর। এককালে দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড ইতিমধ্যে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। আর বোধনের আগেই দলের অন্দরে বিসর্জনের বাজনা বাজা মাত্র তীব্র কটাক্ষে তা চাপা দিয়ে দিলেন মহাসচিব। মুকুল রায়ের দল ছাড়ার ঘোষণার পর সাংবাদিক সম্মেলন করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, উনি চলে যেতে চান তো যাচ্ছেন না কেন? পাশাপাশি, মুকুলকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করল তৃণমূল।
[ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তৃণমূল ছাড়লেন মুকুল ]
দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল মুকুল রায়ের। তবে সে তো নতুন কিছু নয়। বাংলার রাজ্য রাজনীতি, বহুদিন থেকে এ ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। অনেকটাই যেন মান-অভিমান এর জমজমাট পালা। বছর বছর মোড়ক পালটে তা চলতে থাকে। তবে এবার হাওয়াটা অন্যরকমই ঠেকে।সূত্রের খবর, দিল্লির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান মুকুল রায়। খান্নার কাছে এক পার্টি অফিসে বসে তিনি নিজের দল গুছোচ্ছেন বলেও খবর চাউর হয়। এদিকে আগেভাগেই তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ছাঁটা শুরু করে দল। বিজেপির সঙ্গে মুকুলের ঘনিষ্ঠতাও ভাল চোখে দেখেনি দল। মহাসচিব জানিয়েছিলেন, যাঁরা বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় তাঁরা কখনও দলের দোসর হতে পারে না। মুকুলের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মুকুলের দলছাড়ার জল্পনা তুঙ্গে ওঠে যখন তিনি রাজ্যের দেওয়া জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা ছেড়ে দেন। আগুনে ঘি দিয়ে কুণাল ঘোষের পাড়ার পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে, পার্থকে বাচ্চা ছেলে বলে কটাক্ষও করেন মুকুল। অবশেষে পঞ্চমীতে ঘোষণা। দল ছাড়ার কথা পাকাপাকিভাবে জানিয়ে দিলেন মুকুল রায়।
[ বান্ধবীর সঙ্গে বহিষ্কৃত সিপিএম সাংসদ ঋতব্রতর ঘনিষ্ঠ ছবি ভাইরাল ]
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ক্ষোভ গোপন থাকেনি মহাসচিবের কথায়। যা জানালেন তার সারমর্ম এই, মুকুল যা করেছেন তা বিশ্বাসঘাতকতারই শামিল। তাঁর অভিযোগ, দলে থেকে দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন মুকুল। কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে মাথা নত করে মুকুল নিজের পিঠ বাঁচাচ্ছেন বলেই তাঁর অভিযোগ। বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ প্রসঙ্গে পার্থ বলেন, যাঁরা বুদ্ধিমান, তাঁরাই ইঙ্গিত বুঝবেন। এদিন নাম না করেই মুকুলকে কার্যত তুলোধোনা করলেন তৃণমূল মহাসচিব। জানালেন, পরিচয়হীন এক ব্যক্তিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। নিজের স্বার্থে তিনিই দলকে ডোবানোর অঙ্ক কষছিলেন। জগদ্দলে যখন তিনি নির্বাচনে হেরেছিলেন, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেদিনের কথা মুকুল সম্ভবত ভুলে গিয়েছেন বলেই কটাক্ষ পার্থর। তবে দলে থেকে যাঁরা দলবিরোধী কাজ করেন, দল তাঁর সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করারই সিদ্ধান্ত নিল। পার্থর প্রশ্ন, দল ছাড়া যখন মনস্থিরই করে ফেলেছেন, তাহলে মুকুল যেতে দেরি করছেন কেন? তাঁর আশা, কথামতো সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন মুকুল। এই মন্তব্যের পর মহাপঞ্চমীতে রাজ্যের রাজনৈতিক নাটক যে পুরোদস্তুর জমে গেল, তা বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.