গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: নির্বাচন-পরবর্তী অশান্তির অভিযোগে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে (TMC) কাঠগড়ায় তুলছে বিরোধী দলগুলি। একদিকে দলীয় কর্মীদের ঘর ছাড়া করার অভিযোগ, অন্যদিকে পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ উঠছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। এমন সময় বসিরহাটে (Basirhat) যেন উলট পুরাণ! বেহাত হওয়া সিপিআইএম-এর কার্যালয় ফিরিয়ে দিল তৃণমূল।
জানা গিয়েছে, ১৯৮৫ সালে তৎকালীন বাম নেতৃত্ব বসিরহাট ১ ব্লকের পিফা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে জমি কিনে সিপিএমের কৃষক সভার একটি কার্যালয় তৈরি করে। পরে সেটি সিপিআইএমের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বামফ্রন্টের ক্ষমতা খর্ব হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় সেই কার্যালয়। অভিযোগ, নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর গত ৪ মে কিছু তৃণমূল কর্মী কার্যালয়টি দখল করে নেয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। শেষে তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানায় স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। দখলদারির দেড় মাস পর স্থানীয় প্রশাসন ও বিধায়কের উদ্যোগে উদ্ধার হল সেই পার্টি অফিস।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই দখল করা পার্টি অফিস ফিরিয়ে দিল তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বই। সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শাহানুর মণ্ডল, বসিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সুরিন্দর সিং-সহ অন্যান্যরা। বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কার্যালয়ের তালা খুলে সিপিএম নেতৃত্বের হাতে চাবি তুলে দেন। পাশাপাশি তৃণমূলের দলীয় পতাকা নামিয়ে সেখানে উত্তোলন করা হয় সিপিআইএমের দলীয় পতাকা। দখল হওয়া পার্টি অফিস ফেরত পেয়ে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি সিপিএম নেতা পলাশ সরকার, রাজু আহমেদরা। লাল ফুল আর লাল মিষ্টিতে হল সৌভ্রাতৃত্ব বিনিময়ও হয় দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
সিপিআইএময়ের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সদস্য রাজু আহমেদ জানান, “আমরা একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও ফল পায়নি। শেষে তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বের কাছেও আবেদন জানাই মীমাংসার জন্য। আজ তার সুরাহা হল। ভোটে জয়-পরাজয় আছে। রাজনীতির লড়াই হবে। কিন্তু দলীয় কার্যালয় দখলের ঘটনা অযৌক্তিক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.