Advertisement
Advertisement

Breaking News

শিকার উৎসবে হত্যা নয়

বন্যপ্রাণ হত্যা নয়, ‘শিকার উৎসব’-এ অহিংসার বার্তা অযোধ্যা পাহাড়ের আদিবাসীদের

জমায়েত হয়, এমন প্রথা স্থগিত করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে।

Tribal people in Ayodhya hill,Purulia spreading awarness on not to cull wildlife
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 3, 2020 6:59 pm
  • Updated:May 3, 2020 7:01 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বন্যপ্রাণ হত্যা নয়। বুদ্ধ পূর্ণিমায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ‘শিকার উৎসব’ বন্ধ করতে এবার অযোধ্যা পাহাড়ে প্রচার করছেন আদিবাসীরাই। বনদপ্তরের ধারাবাহিক প্রচারে সাড়া দিয়ে এবার ‘শিকার’ বন্ধের বার্তা দিচ্ছে অযোধ্যা পাহাড়। একে লাগাতার প্রচারের সাফল্য বলেই মনে করছে বনদপ্তর।

PRL-Shikar-Utsab-notice
শিকার বন্ধের বিজ্ঞপ্তি

মারণ করোনা ভাইরাসের থাবায় দেশজুড়ে লকডাউন। আগামী ৭ মে সাঁওতালদের ‘সেন্দ্রা’র (অনুসন্ধান) পর ‘ল-বীর-বাইসি’ (সুতান টান্ডি) বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্থগিত করেছে আদিবাসী
সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। বাংলা ছাড়াও সাঁওতালি এবং ইংরাজি ভাষায় দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিটি। সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। তবে পূজার্চনা ও রীতিনীতি পালন হবে। কিন্তু কোনওভাবেই জঙ্গলে ঢুকে বন্যপ্রাণীকে লক্ষ্য করে তির ছোঁড়া যাবে না। বুদ্ধ পূর্ণিমায় অহিংসার বার্তা নিয়ে সোশ্যাল সাইটেও প্রচার চালাচ্ছেন আদিবাসীরা। বন্যপ্রাণ হত্যা বন্ধে অযোধ্যা পাহাড়তলিতে পুরুলিয়া বনবিভাগের বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলও গ্রামে গ্রামে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে, মাইক ফুঁকে প্রচার করছে। সবমিলিয়ে সমগ্র অযোধ্যা পাহাড়ের একটাই শপথ, ‘শিকার নয়। বন্যপ্রাণ হত্যা থেকে বিরত থাকুন।’

Advertisement

[আরও পড়ুন: শান্তি ফেরাতে টিকিয়াপাড়ায় পুলিশ-জনতা বৈঠক, জমায়েতের ভিডিও ভাইরাল]

এই কয়েক বছর আগেও বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন আদিবাসীদের ‘শিকার উৎসব’-এর বলি হয়েছে কত বন্যপ্রাণী! তীক্ষ্ণ তিরে বিদ্ধ হয়ে বেঘোরে প্রাণ গিয়েছে চিতল হরিণের। বল্লমের খোঁচায় ফালা ফালা হয়ে গিয়েছে বুনো শূকরের দেহ। বনমুরগি, বুনো খরগোশ এমনকী ময়ূরেরও প্রাণ গিয়েছে। কিন্তু এবার শিকার উৎসবের প্রাক্কালে অযোধ্যা পাহাড় জুড়ে যেন অন্য ছবি। বুদ্ধ পূর্ণিমায় ‘শিকার উৎসব’ কথাটাই যেন বলতে চাইছেন না অযোধ্যা পাহাড়ের মানুষজন। ভারত জাকাত মাঝি পারগানা জুওয়ান মহলের জেলা সভাপতি রাজেন টুডু বলেন, “শিকার নয়। বুদ্ধ পূর্ণিমার রাতে আমরা অযোধ্যা পাহাড়ে ‘সেন্দ্রা’তে বার হই। অর্থাৎ পাহাড়ে কোথায় খাদ্যসামগ্রী, ফলমূল, ওষুধ রয়েছে, তার খোঁজ চলে। পরে সুতান টান্ডিতে মিলিত হই। এই বিষয়ে আলোচনা হয়। মত বিনিময় হয়ে থাকে। আগে বিচারও হত। সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। তবে কোনওভাবেই বন্যপ্রাণ হত্যা নয়।”

[আরও পড়ুন: কেমো নিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত ক্যানসার রোগী, খড়গপুরের ঘটনায় আতঙ্ক]

লকডাউনে মানুষজন ঘরবন্দি হওয়ায় পাহাড়ে এখন জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়েও চলে আসছে হরিণ। কানে আসছে ময়ূরের ডাক। কালো পিচ রাস্তা পার হচ্ছে হায়না। তাই বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলের আধিকারিক মনোজ কুমার মল্ল বলছেন, “এই পরিস্থিতিতে শিকার করা খুবই সহজ। তবে আমাদের ধারাবাহিক প্রচারে এখন আক্ষরিক অর্থেই অহিংসার বার্তা পাহাড়ে। আদিবাসীরাও যে এই প্রচারে শামিল।” যুগযুগান্ত ধরে বহমান প্রথাটুকু থাক নিয়মের গণ্ডিতে, কিন্তু বাস্তবে ‘শিকার উৎসব’-এর উল্লাসে বন্যপ্রাণ বধ আর নয়। একথা বুঝতে পেরেছেন আদিবাসীরাই।

PRL-Shikar-Utsab-awarness1
ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে প্রচার

ছবি: অমিত সিং দেও। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement