Advertisement
Advertisement
Bankura

‘ডাইন’ অপবাদে মারধর, সালিশি সভার নিদানে গ্রামছাড়া আদিবাসী দম্পতি! শোরগোল বাঁকুড়ায়

ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে তৎপর পুলিশ।

Tribal couple harassed and left village after tagged as 'witch' in Bankura | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 9, 2022 1:50 pm
  • Updated:June 9, 2022 6:06 pm  

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ‘ডাইন’ অপবাদে মারধর করে পরিবারকে গ্রামছাড়া করার অভিযোগে সরগরম বাঁকুড়ার (Bankura) ডাকাই গ্রাম। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই দম্পতি। অভিযোগ, গ্রামের এক ‘জানগুরু’র নির্দেশেই তাঁদের এমন পরিস্থিতি। অর্থাৎ এর নেপথ্যে কুসংস্কারের প্রভাব রয়েছে বলেই স্পষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি জানাজানি হতে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন তৎপর হয়েছে। সারেঙ্গা (Sarenga) থানার পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামের মানুষজনকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে যে ডাইন বলে কিছু হয় না। গ্রামছাড়া দম্পতি যাতে নিরাপদে ফের ঘরে ফিরতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সারেঙ্গা থানার অন্তর্গত ডাকাই গ্রামের ওই আদিবাসী পাড়ার বছর চোদ্দোর এক কিশোর বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল। অসুখ সারাতে এক ‘জানগুরু’র শরণাপন্ন হয় ওই কিশোরের পরিবার। সেই ভদ্রলোক নিদান দেয়, গ্রামের ওই বৃদ্ধ দম্পতি – সরলা হেমব্রম ও বাউল হেমব্রম ‘ডাইন’। তাদের অভিশাপেই অসুখে ভুগছেন গ্রামের মানুষ। তাই তাদের গ্রামছাড়া করলে সমস্যা মিটবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিবাহবিচ্ছিন্না বোনের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানো উচিত ভাইয়ের, পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাই কোর্টের]

‘জানগুরু’র ওই নিদান শোনার পর গ্রামের বাসিন্দারা সালিশি সভা ডাকেন। সেখানে ঠিক হয়, ওই দম্পতিকে মেরে ফেলা হবে। কিন্তু এমন সিদ্ধান্তে আপত্তি জানান গ্রামের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। সালিশি সভায় হাজির এক যুবকের কথায়, “মঙ্গলবার রাতে ওই সালিশি সভার পর আমি বিষয়টা পুলিশে জানানোর কথা বলি। তাতে কিছুটা কাজ হয়।” পরদিন অর্থাৎ বুধবার সকালে ওই দম্পতিকে হাতের কাছে পেয়ে মারধর শুরু করে গ্রামের বাসিন্দারা। এরপর বুধবার রাতেই পরিবার নিয়ে গ্রামছাড়া হন ওই বৃদ্ধ দম্পতি।

[আরও পড়ুন: স্রেফ বন্ধুত্বের খাতিরে কেতুগ্রামের নার্সের স্বামীকে সাহায্য, হাত কাটার ঘটনায় ধৃত আরও ২]

বৃহস্পতিবার সকালে হেমব্রম পরিবার সারেঙ্গা থানা ও স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। ব্লকের এসডিপিও (SDPO) কাশীনাথ মিস্ত্রির কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামছাড়া বৃদ্ধা সরলা হেমব্রম ও তার স্বামী বাউল হেমব্রম। সারেঙ্গা থানার পুলিশ জানাচ্ছে, “গ্রামের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে, ডাইন বলে কিছু নেই। ঘরছাড়ারা যাতে বাড়ি ফিরতে পারেন, তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” তবে কতদিন তাঁদের এভাবে গ্রামছাড়া হয়ে থাকতে হবে, তা ভেবেই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সরলা ও বাউল হেমব্রম।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement