Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিশেষ শিশুদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, স্বপ্ন গড়ার কারখানা দুর্গাপুরের স্টার

বর্তমানে প্রায় ১৯ জন ‘স্টার’ এই কেন্দ্রে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:August 25, 2019 2:45 pm
  • Updated:August 25, 2019 2:45 pm  

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কারওর স্বপ্ন সিআর সেভেন। তো কেউ চায় কোহলির মতন ক্রিকেটার হতে। কারওর আবার রবি ঠাকুরের গান প্রিয় তো কারওর শখ থাঙ্কমনি কুট্টির মতন নাচা। কিন্তু স্বপ্ন আর ভালবাসাগুলোর পথ আটকে দাঁড়ায় শরীর ও মন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্যে ‘বিশেষ’ কিছু একটা করার শপথ নেয় দুর্গাপুরের গৌতম-মানসরা। তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় রঞ্জিত গুহ।

যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। ২০১৭ সালের প্রথম দিকেই এই ধরনের শিশুদের নিয়ে ভাল ও উন্নতমানের প্রশিক্ষণের জন্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেন এই তিনমূর্তি। প্রচুর আগ্রহ দেখায় লোকে। আর তাতেই উৎসাহিত হয়েই ওই বছরের এপ্রিল মাসেই দুর্গাপুরে পথ চলা শুরু ‘দুর্গাপুর সোসাইটি ফর ট্রেনিং এন্ড রিহাবিলিটেশন’-এর বা স্টারের। গৌতম ভট্টাচার্য ও মানস কুমার খাঁ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্মী। তাদের পুত্র সায়ন ও সুজয়ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু। তারা দুর্গাপুরের একটি এই ধরনের কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে থাকলেও বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি। তারপর থেকেই নিজেরাই কিছু একটা করব বলে সিদ্ধান্ত নিই বলে জানান গৌতম ভট্টাচার্য। দুর্গাপুর্ ইস্পাতনগরীর দয়ানন্দ রোডের ছোট্ট ঘরে সুজয়, সায়ন ছাড়াও ছয় বছরের কোয়েল ও পাঁচ বছরের মেঘাকে নিয়ে শুরু হয় স্টার। বর্তমানে প্রায় ১৯ জন ‘স্টার’ এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

Advertisement

কেন এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অন্যদের থেকে আলাদা? এই প্রশ্নে স্টারের সভাপতি রঞ্জিত গুহ জানান, “যারা এই ধরনের বাচ্চাদের প্রশিক্ষণ দেবেন তাদেরও বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত হতে হয়। তাছাড়া এদের মনকে বোঝা অসম্ভব। শুধু এদেরই নয় সঙ্গে সঙ্গে অভিভাবকদেরও প্রশিক্ষণ নিতে হবে। ঘরে তারা কেমন আচরণ করবেন এই ধরনের সন্তানদের সঙ্গে তাও শিখতে হয়। ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক উভয়কেই এখানে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন,“ এইধরনের কেন্দ্রের অভাব ছিল দুর্গাপুরে। আমাদের লক্ষ্য এই ধরনের শিশুদের সাধারণ মানুষের মতনই স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা।” বর্তমানে স্টারে ৩ জন প্রশিক্ষক, ২ জন সহকারি প্রশিক্ষক, ১ জন অঙ্কন শিক্ষক ও ১ জন ফিজিও রয়েছেন। পানাগড় থেকে বারো বছরের ছেলেকে নিয়ে এখানে আসেন বিদ্যা জয়সওয়াল। তিনি জানান, “বিগত একবছের প্রচুর উন্নতি হয়েছে। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে ছেলের।”

সেরিব্রাল পালসি, মানসিক প্রতিবন্ধকতা, অর্টিজম, অতি চঞ্চলতা, মনোযোগের অভাব, শিক্ষন প্রতিবন্ধকতা এবং বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা শিশুদের বিশেষ ও উন্নত ধরনের প্রশিক্ষণ দিলেই তারা স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। এই রকম উদাহরণ শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা পৃথিবী জুড়েই রয়েছে বলে জানান স্টারের সহকারি সম্পাদক মানস খাঁ। অভিভাবকদের আর্থিক সহযোগিতা ও শুভানুধ্যায়ীদের সাহায্যেই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ‘স্টার’দের নিয়ে এগিয়ে চলেছে দুর্গাপুরের স্টার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement