জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: করোনা আতঙ্কে কি এবার মতুয়াদের ঐতিহ্যবাহী মেলাও স্থগিতের পথে? এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠছে বনগাঁর ঠাকুরনগরে। কারণ, রবিবার ঠাকুরনগর রেল স্টেশন চত্বরে মাইকিং করে মেলা বন্ধের পক্ষে প্রচার চলছে। চলে গণস্বাক্ষর সংগ্রহও। স্থানীয় নাগরিকরাই সুরক্ষার স্বার্থে মেলা বন্ধ রাখতে উদ্যোগী বলে জানা যাচ্ছে। চলে সই সংগ্রহের কাজও। তা জমা দেওয়া হবে ঠাকুর পরিবারের দুই সদস্য মমতাবালা ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুরের হাতে।
ঠাকুরনগরের সচেতন নাগরিক বৃন্দের দাবি, বারণী মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের মানুষের জমায়েত হয়। দলবদ্ধভাবে কামনা সাগরে স্নানপর্ব চলে। সেখান থেকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। বিশেষত যেখানে বড় যে কোনও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অকারণ ভিড় করতে বারণ করছেন, সেখানে বারণী মেলাতেও এত জনসমাগম না করার পক্ষেই স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ঠাকুরবাড়ির ভক্তরা। তাই এই বছরের জন্য বারুণী মেলা বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে ঠাকুর পরিবারের সদস্য শান্তনু ঠাকুর বলেন, “মতুয়া মেলা করার আমরা কেউ নই। ভক্তরাই এই মেলার আয়োজক। আমরা কোনও ভক্তকে ঠাকুরবাড়িতে আসতে বারণ করতে পারি না। তবে এই মেলার পবিত্রতা নিয়ে মতুয়া ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে। তাই সব সিদ্ধান্তই নেবেন তাঁরা।” মতুয়া মহাসংঘের অন্যতম প্রধান মমতাবালা ঠাকুরের কথায়, “সারা দেশে করোনা ভাইরাসের জেরে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তাতে সরকারি কোনও নির্দেশিকা জারি হলে, সেটা আমরা মান্যতা দেব। মেলা করব কিনা, দ্রুত আলোচনা করে তা ঠিক করে নেওয়া হবে। কারণ, আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভক্তদের জীবন এবং তাঁদের নিরাপত্তা।” এমনিতেই ঠাকুরবাড়ি তথা মতুয়া মহাসংঘ এখন দ্বিধাবিভক্ত। যার নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক কারণও। এই মেলা নিয়েও যে ঠাকুরবাড়ির অন্দরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে, মমতাবালা এবং শান্তনু ঠাকুরের বিবৃতিতেই তা স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.