অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: সিকিমে (Sikkim) ধর্মঘটের জেরে শিলিগুড়িতে আটকে পড়লেন পর্যটকরা। দিনভর কাউকে বাসস্ট্যান্ডে, কাউকে আবার হোটেলে বসেই কাটাতে হল। শিলিগুড়ি (Siliguri) পৌঁছে ধর্মঘটের খবর জানতে পেরে বিপাকে পড়েন সকলে। সিকিমে বসবাসকারী নেপালিদের সুপ্রিম কোর্ট ‘বিদেশি’ বলে উল্লেখ করায় বুধবার ১২ঘন্টার ধর্মঘট ডেকেছিল জয়েন্ট অ্যাকশন কাউন্সিল। তাদের এই ধর্মঘটকে (Strike) পূর্ণ সমর্থন করে বাকি রাজনৈতিক দলগুলি। তাই এদিন গোটা সিকিম খাঁ খাঁ করছিল। সবই বন্ধ ছিল। এমনকী ছাড় দেওয়া হয়নি পর্যটকদের গাড়িকেও।
কেউ এসেছেন বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে, কেউ আবার নদিয়া থেকে কেউ গঙ্গারামপুর থেকে। সকলেই এসে সিকিম বাসস্ট্যান্ডে ভিড় জমান। কিন্তু এসেই দেখেন তা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। স্ট্যান্ডে কেউ নেই। বাস থাকলেও তা বন্ধ। তখনই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে নাজিমুল হকের। তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম (Chittagong) থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, “সীমান্ত পারাপারের সময়ও এই ধর্মঘটের খবর পাইনি। এখন এখানে এসে জানতে পারলাম। শুনলাম ৬টার পর কিছু বেসরকারি গাড়ি হয়ত চলবে। সেই আশাতেই আছি, নইলে হোটেলে থাকব।”
আবার ঢাকা থেকে কয়েকজন যুবক ঘুরতে এসেছেন। তাঁরাও বিপাকে পড়ে যান। এ প্রসঙ্গে মুশফিকুর রহমান বলেন, “টোটো করে এই বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছনোর পর ধর্মঘটের খবর পেলাম। আজকের দিনটাই নষ্ট হয়ে গেল। হোটেল ভাড়া করা আছে গ্যাংটকে।” একইভাবে বাচ্চাদের নিয়ে বিপাকে পড়ে গঙ্গারামপুর থেকে আগত শিল্পা বসু। তিনিও বলেন, “গোটা দিনটা নষ্ট হল। না যেতে পারলে শিলিগুড়িতেই হোটেলে থাকব।”
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)একটি মামলার রায়ে বলেছিল সিকিমে থাকা নেপালিরা বিদেশি। এরপর থেকেই সরগমর হয়ে ওঠে সিকিমের রাজনীতি। গত ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারিতে ধর্মঘট ডেকেছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংয়ের সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। এবার ধর্মঘট ডাকে জয়েন্ট অ্যাকশন কাউন্সিল। তাদের সমর্থন করেছিল সব দল। তাই এদিন সিকিমে কোনও গাড়ি যাতায়াত করেনি। গোটা সিকিম ছিল থমথমে। একটি লোকও রাস্তায় বেরয়নি। পর্যটকদেরও হোটেলে বন্দি থাকতে হয়েছে। যদিও কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি। সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে হাতেগোনা কয়েকটি গাড়ি চলাচল করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.