সৌরভ মাজি, বর্ধমান: পাড়ার গলি থেকে বড় রাস্তা। টোটো বিচরণ এখন সর্বত্র। জেলা, শহর কিংবা মফঃস্বলের রাস্তায় নিত্য যানজট। নাজেহাল পথচারীরা। কিন্তু, টোটোচালককে কিছু বলার উপায় নেই। কিছু বলতে গেলেই তাঁরা রে রে করে ওঠেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমনই, মারমুখী টোটোচালকদের হাত থেকে রেহাই পেলেন না বর্ধমান পুরসভার ২ জন অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষী বা গ্রিন ভলানটিয়ার। টোটো সরাতে বলায় একদল চালক ক্ষুর, হকিস্টিক নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনায় গুরুতর আহত দু’জনই। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি তাঁরা। ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত পলাতক। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান শহরে।
[সমাজবিরোধী গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত কাটোয়া, উদ্ধার গুলি ও বোমা]
তৃণমূল জমানায় কর্মসংস্থানের জন্য পুলিশে সিভিক ভলানটিয়ার নামের পদটি তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পদে অস্থায়ী চাকরি পেয়েছেন বহু বেকার যুবক-যুবতী। জেলায় আবার অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষী পদে বেকারদের চাকরি দেয় পুরসভাও। যাঁরা চাকরি পান, তাঁরা গ্রিন ভলানটিয়ার নামে পরিচিত। বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান শহরে পুরসভার অফিসের সামনে ডিউটি করছিলেন দু’জন গ্রিন ভলানটিয়ার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকালে ব্যস্ত সময়ে পুরসভার অফিসে সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বেশ কয়েকটি টোটো। ফলে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাঁরা পুরসভায় আসেন, তাঁদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছিল। টোটোচালকদের সরে যেতে বলেন ওই দুই গ্রিন ভলানটিয়ার। বেশ কয়েকটি টোটো সরেও যায়। কিন্তু, বারবার বলা সত্ত্বেও একটি টোটো কিছুতেই সরছিল না বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একসময়ে বিরক্ত হয়ে ওই টোটোর চাকার হাওয়া খুলে দেন পুরসভার দু’জন অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষী। তখন কোনও সমস্যা হয়নি। গাড়ি নিয়ে চলে যান টোটোচালক।
[সার্ভিস রিভলবার পরিষ্কার করতে গিয়ে ছুটল গুলি, মৃত্যু এসআইয়ের]
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার আধঘণ্টা পর সদলবলে ফের বর্ধমান পুরসভার সামনে হাজির হন ওই টোটোচালক। তাঁর ও সঙ্গীদের হাতে ছিল লাঠি, হকিস্টিক, এমনকী ক্ষুরও। পুরসভার দুই অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষীর উপর চড়াও হয় সকলে। লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে চলে বেধড়ক মারধর। একজন নিরাপত্তারক্ষীকে লক্ষ্য করে ক্ষুরও চালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত ওই দুই গ্রিন ভলাটিয়ার ভরতি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মূল অভিযুক্ত-সহ বাকিরা পালিয়ে গেলেও, একজনকে ধরে ফেলেন বর্ধমান পুরসভার অন্য নিরাপত্তারক্ষীরা। তাকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান স্বরূপ দত্ত। বর্ধমানের ওসি(ট্রাফিক) চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বেআইনি টোটো চালকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। এই ধরনের হামলার বরদাস্ত করা হবে না।
[কাগজ বিক্রির পাশাপাশি চলেছে পড়াশোনা, মাধ্যমিকে সফল মূক ও বধির কিশোরী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.