টিটুন মল্লিক,বাঁকুড়া: জন্ম থেকেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল একাধিক কঠিন রোগ। চিকিৎসা করিয়েও খুব একটা লাভ হয়নি। সেই কারণেই সদ্যোজাতকে গন্ধেশ্বরী নদীতে ফেলে খুনের অভিযোগ উঠল পরিবারের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ওই সদ্যোজাতের বাবা-সহ ২ জনকে আটক করেছে বাঁকুড়া থানার পুলিশ। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, খুন নয়, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলেই জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
কয়েকদিন আগেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের বাসিন্দা নির্মলা শতপথির স্ত্রী। জন্মের পর থেকেই কঠিন রোগে ভুগছিল শিশুটি। ফলে জন্মের পরই বেশ কিছুদিন শিশুটিকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ এবং পরে কলকাতার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলে। কিন্তু তাতেও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি শিশুটি। এরপর শুক্রবার রাত দশটার নাগাদ শিশুটিকে পরিবারের সদস্যদের বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী নদীর উপরের সেতু থেকে নীচে ছুঁড়ে ফেলে দিতে দেখেন স্থানীয়রা। বিষয়টি নজরে পড়তেই অভিযুক্তদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল পাঁচঘন্টা তল্লাশি চালিয়ে গন্ধেশ্বরী নদী থেকে উদ্ধার করে ওই শিশুটিকে। এরপরই শিশুটির বাবা-সহ দুজনকে আটক করে তদন্তকারীরা।
অভিযুক্তদের দাবি, অসুস্থ অবস্থায় কলকাতা থেকে বাঁকুড়া ফেরার পথেই মৃত্যু হয় শিশুটির। তাই আর দেহ বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাননি তাঁরা। সেই কারণেই সেতু থেকে গন্ধেশ্বরী নদীবক্ষে সদ্যোজাতকে ছুঁড়ে ফেলা হয়। স্থানীয়দের দাবি, ফেলে দেওয়ার আগের মুহূর্তে শিশুটির কান্না শুনতে পেয়েছিলেন তাঁরা। অর্থাৎ সেই সময়ও প্রাণ ছিল সদ্যোজাতের। স্থানীয়দের অনুমান, শিশুর চিকিৎসা করাতে গিয়ে অর্থসংকটে ভুগছিলেন মা,বাবা৷ সেই কারণেই জীবন্ত শিশুটিকে নদীতে ফেলে খুনই করা হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “অভিযোগ পেয়ে দুজনকে আটক করা হয়েছে। দেহটিও ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। অবিলম্বে আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.